ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি শিক্ষার্থীদের নাগালের বাইরে দাবি করে তা কমানোর অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাবি শাখা।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ সেশনের আবেদন ফি ধরা হয়েছে এক হাজার ৫০ টাকা এবং আইবিএ ইউনিটের আবেদন ফি এক হাজার ৫০০ টাকা, যে আবেদন ফি শিক্ষার্থীদের জন্য সংকুলান খুবই কষ্টসাধ্য।
অতীতের আবেদন ফি এর সঙ্গে তুলনা করে শিবির বলে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৩৫০ টাকা। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৪৫০ টাকা। এরপর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৫০ টাকা। পরে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ফি আরও ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়। এরপর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি ছিল ১ হাজার টাকা। ২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি আরও ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০ টাকা করা হয়েছে।
ঢাবিতে ভর্তি ফি এর পরিমাণ নিয়ে আরও বলা হয়, ৫ বছরের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফি বেড়েছে তিনগুণ অর্থাৎ ৭০০ টাকা বেড়েছে। পত্রিকার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, শুধু এক শিক্ষাবর্ষের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা থেকেই ১৭ কোটি টাকা ‘লাভ’ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্রমান্বয়ে প্রতি শিক্ষাবর্ষেই আবেদন ফি বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রতি অতিরিক্ত আবেদন ফি এর বোঝা চাপানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার দরিদ্র-মধ্যবিত্ত। এর মধ্যে ১০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থীর পরিবার হতদরিদ্র। এসব শিক্ষার্থীর পরিবারের মাসিক আয় ৪ হাজার টাকার কম। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবস্থা এই পরিসংখ্যান থেকে সহজেই অনুমান করা যায়।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, প্রতি শিক্ষাবর্ষেই আমরা পত্রিকায় দেখি শিক্ষার্থীরা ধার-দেনা করে, বাড়ির গবাদিপশু, জমি ইত্যাদি বিক্রি করার মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি ও ভর্তি ফি’র ব্যয় সংকুলান করে থাকেন। এমতাবস্থায় অতিরিক্ত আবেদন ফি নির্ধারণ করা শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া জুলুম বলে মনে করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের নিকট দাবি জানাচ্ছি যে, অনতিবিলম্বে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/এমএইচটি

