ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদের হলগুলোতে আকৃতির পার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিশেষত, বড় হলগুলো—বেগম রোকেয়া হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলে রুমগুলো খালি পড়ে থাকলেও, ছোট হলগুলো যেমন শামসুন্নাহার, কুয়েত মৈত্রী ও বঙ্গমাতা হলে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশেষ করে, রোকেয়া ও সুফিয়া কামাল হলগুলো ছাত্রলীগ মুক্ত হওয়ার পর এসব হলের কিছু রুম খালি পড়ে আছে। অথচ অন্য হলগুলোর শিক্ষার্থীরা সিট সংকটে ভুগছেন, কিছু হলেই সিট নেই। এতে অসংলগ্নতা সৃষ্টি হয়েছে—এক দিকে রুম খালি, অন্য দিকে গাদাগাদি।
বিজ্ঞাপন
৩ সেপ্টেম্বর, সিট সংকটের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। তারা নতুন হল নির্মাণের দাবি তুলেছেন, কারণ সিট সংকট কেটে ওঠা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরুর আগেই সিট বিতরণের জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বঙ্গমাতা হলের শিক্ষার্থী অনন্যা কর ঢাকা মেইলকে বলেন, “বড় হলগুলোর রুমগুলোতে কতজন মেয়ে থাকে, সেটি হয়তো প্রশাসন জানে না। সুষম বণ্টন তখনই সম্ভব যখন হলে পর্যাপ্ত সিট থাকবে। তাই নতুন হল নির্মাণ প্রয়োজন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বঙ্গমাতা হলের শিক্ষার্থী জানান, “আমাদের হলে দেওয়ার মতো সিট নেই, অথচ অন্য হলে অনেক রুম খালি পড়ে আছে। এটা বৈষম্য। একজন নারী যদি নিরাপদভাবে না থাকে, তার সমস্যা হয়।”
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যথাযথ জায়গা দিচ্ছে না। প্রশাসন নতুন হল নির্মাণ করুক, নাহলে বড় হলগুলোতে কিছু ছাত্রীকে স্থানান্তরিত করুক যাতে ছোট হলগুলোর ওপর চাপ কমে।”
কুয়েত মৈত্রী হলের এক শিক্ষার্থী জানান, “বঙ্গমাতা হলে কিছুটা ভালো অবস্থায় থাকা যায়, কিন্তু কুয়েত মৈত্রীতে পরিবেশ ভালো নয়। বিল্ডিংটি পুরনো ও পরিত্যক্ত, বৃষ্টির সময় পানি ওঠে, আর একটাই ক্যান্টিনে খাবারের অবস্থাও ভালো না।”
কুয়েত মৈত্রী হলের নবনিযুক্ত প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবা সুলতানা ঢাকা মেইলকে বলেন, “আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি, বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের প্রশাসনের সাথে আলোচনা চলছে। আশা করি, শিগগিরই উন্নতি দেখা যাবে।”
নিউমার্কেটের পাশে এসব হলগুলোর নারীরা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হচ্ছেন এবং প্রায়ই আন্দোলন করছেন, কিন্তু তা কখনো সফল হয়নি। রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, এবার আন্দোলনটি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
আরএ/এইউ