বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (৬ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর এলাকায় পূর্বের পেনশন স্কিম চালু ও সার্বজনীন পেনশন বাতিলের দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
এই প্রজ্ঞাপন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষাদর্শনের প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শনের শামিল বলে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা মনে করেন। তাছাড়া, তাদের দাবি পূরণ না হলে ফের দিনব্যাপী আন্দোলন করা হবে বলে ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, আমরা রুটি-রুজির জন্য, ক্ষুধা নিবারণের জন্য এখানে এসেছি। এখানে আমাদের বাধা দিলে আমাদের পেটে ভাত না থাকলে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। আমাদের বস্ত্র, বাসস্থান না দিলে আমরা ন্যায্য দাবি আদায় করে নেবো৷ আমরা বলতে চাই, আমাদের মতো গরিবদের পেটে লাথি দেবেন না৷ হঠাৎ করেই এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আরও অনেকদিন ক্ষমতায় থাকুন কিন্তু আমাদের পেট খালি রাখবেন না। পূর্বের চালুকৃত পেনশন চালু রাখুন।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এই বৈষম্যমূলক পেনশন যা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে তা বাতিল করে পূর্বের পেনশন চালু রাখার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা অনুরোধ জানাই। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল আন্দোলন, সকল গণ আন্দোলনকে প্রতিহত করেছে। সুতরাং এখানে সরকার যতই গেজেট প্রকাশ করুক সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে অনুমোদন করতে হয়। ঢাবি নেতৃবৃন্দকে বলতে চাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কর্মচারীদের স্বতন্ত্র পে স্কেল দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি জীবিত থাকলে ১৬ আগস্ট কর্মচারীরা স্বতন্ত্র পে স্কেল পেতো। তাই আপনারা এটা পুনরায় বিবেচনা করে দেখবেন। বঙ্গবন্ধুর চাওয়াকে আপনারা পূর্ণ করবেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবেন।
বিজ্ঞাপন
চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্য সচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. মোবারক হোসেন বলেন, আমাদের ওপর আরোপিত সার্বজনীন পেনশন বাতিল করে পূর্বের পেনশন পুনরায় চালু করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই সুবিধা পেয়ে আসছি। কিন্তু এখন আমাদের সুবিধাবঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের জন্য কেন এই বৈষম্য? তাই আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এই বৈষম্যের প্রতিবাদ জানাই। আমরা বলতে চাই, আমরা সরকারের বিরুদ্ধে নয় আমরা পেটের দায়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
কর্মচারী সমিতি ও আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ বলেন, জাতির বিবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা বলতে চাই এক দেশে দুই নীতি আমরা মানি না। ঢাবি পরিবার মনে করে আমি খাবো আমার পাশের মানুষ খেতে পারবে না সেটা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অনেকেই মাস্টার্স পাশ। যেখানে বিসিএস এ সিজিপিএ চাওয়া হয় ২.৫০ সেখানে আমাদের কর্মচারী নিয়োগে চাওয়া হয় ২.৭৫ সিজিপিএ। সুতরাং আমাদের কর্মচারীরা মেধায়ও অনেক এগিয়ে রয়েছে। তাই আমাদের ওপর আর বৈষম্য না করে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে পূর্বের পেনশন স্কিম চালু করুন এবং ৯ম পে স্কেল চালু করুন।
এমএইচএম

