সম্প্রতি শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে দেশে যে বিতর্ক উঠেছে এর পেছনে অপরাজনীতি রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। কিছু অপরাজনৈতিক দল সংযুক্ত হয়ে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা বিষয়টাকে উস্কানি দিচ্ছে সে ক্ষেত্রে আমরা বলব- এটার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। অপরাজনৈতিক শক্তি তিলকে তাল বানানোর একটা প্রবণতাও সেখানে আছে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে তিনি ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত চা-চক্রে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সিজিপিএপ্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা অবশ্যই বলেছি, সবার সাথে আলোচনা করব, সবার মতামত নেব। সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সংবেদনশীলতার যে জায়গাটা, তা এক এক সমাজে এক এক মাত্রায় হয়ে থাকে। আমরা চাই না যে, যারা অতি মাত্রায় সংবেদনশীল তারা বেশি দুঃখিত হোন। আর যারা কম সংবেদনশীল তাদের বিষয়টাই শুধু প্রধান্য পাবে, সেটা অবশ্যই আমরা চাই না। সেখানে একটা ভারসাম্য অবশ্যই থাকবে। সেজন্য আমরা ইতোমধ্যে কাজ করছি। আমরা আশা করছি যে বিতর্কটা সৃষ্টি হয়েছে সেটার সমাধান হবে।
এর আগে উপাচার্য ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে বলেন, ইসলামি শিক্ষাবিদদের নিয়ে আমরা একটি কমিটি করেছি। সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন ইসলামি চিন্তাবিদ। সুতরাং তারা আমাদের জানাক যে, ধর্মের দিক থেকে কোনো সংবেদনশীলতা আছে কি না? তাছাড়া তথ্যগত দিক থেকে এই শিক্ষা ওই বয়সের শিশুদের জন্য যথাযথ কি না এই আলোচনাটাও এখানে আছে। তাছাড়া এনসিটিবি ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের যে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন তাদেরও মতামত নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, যারা বিষয়টাকে উস্কানি দিচ্ছে সে ক্ষেত্রে আমরা বলব, এটার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। অপরাজনৈতিক শক্তি তিলকে তাল বানানোর একটা প্রবণতাও সেখানে আছে। আমরা বলছি না যে সব সমালোচনা অগ্রহণযোগ্য। সমালোচনা হবেই। একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে সমালোচন হবেই। আলোচনাও হবে। কিন্তু যেখানে যে বিষয়ের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা বা সংযোগ নেই সেটাকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। সেটা একেবারেই একটা অমূলক অভিযোগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বক্তব্য দেন।
প্রতিনিধি/জেবি