পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় নবম শ্রেণির কোনো বিষয়ের বইই পায়নি স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। উপজেলার ২৩টি স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেনি নতুন শিক্ষাবর্ষের বই। ফলে এই শ্রেণির দুই হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য ১৩টি বিষয়ের ১৫ হাজার ৬০০ বইয়ের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই উপজেলার ১১টি মাদরাসার ৮৭০ জন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ১৪টি বিষয়ের ১২ হাজার ১৮০টি বইয়ের চাহিদা দেওয়া হয়। চাহিদা অনুযায়ী মাদরাসার বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছায়। এছাড়া এখনো আসেনি স্কুলের বই। তাই এখন পর্যন্ত স্কুল-মাদরাসায় নবম শ্রেণির বই সরবরাহ করা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে দেওয়া চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য শ্রেণির বই গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই সরবরাহ করা হয়। তাই বই উৎসবে সেসব বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও এখনো মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছেনি নবম শ্রেণির কোনো বই। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নবম শ্রেণির পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন নেছার ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘অন্যান্য এলাকায় সব বই পেয়েছে। অথচ এখনো আমাদের শিক্ষার্থীরা নবম শ্রেণির কোনো বই-ই পায়নি। অষ্টম শ্রেণিতেও কোনো কোনো বই পায়নি। নতুন কারিকুলাম। তাই পুরনো বইতেও পড়ানো যাচ্ছে না। এর ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’
উপজেলার উত্তর কাজির হাওলা মোহসেনিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুল বারেক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘অষ্টম ও নবম শ্রেণির কোনো বইই আমরা এখনো পাইনি।’
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি। ইতোমধ্যে মাদরাসার নবম শ্রেণির সব বই এবং অষ্টম শ্রেণির বাকি পাঁচ বিষয়ের বই পেয়েছি। দুই-একদিনে সেসব বই মাদরাসায় সরবরাহ করা হবে। এছাড়া স্কুলের নবম শ্রেণির বই দুই-একদিনে হাতে পাবো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘জেলার মিটিংয়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসক স্যারও বিষয়টি অবগত। দুই দিনের মধ্যেই সব বই পৌঁছে যাবে।’
এ ব্যাপারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো. হাফিজুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘রাঙ্গাবালী দুর্গম এলাকা হওয়ায় বইগুলো পাঠাতে সমস্যা হয়েছে। যেহেতু সব জায়গার বই ট্রাকে যায়। আর রাঙ্গাবালীতে সরাসরি ট্রাক যায় না। বই পাঠানো হচ্ছে লঞ্চে, একারণেই সমস্যাটি হয়েছে।’
প্রতিনিধি/জেবি
