জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা উপাচার্য ভবন ছেড়ে গেছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় দুই মাস ধরে নতুন করে ভিসি পদে আসার নানা নাটকীয়তার পর গতকাল সোমবার অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পরিবারের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসকে বাসভবন বুঝিয়ে দিয়েছেন।
তবে বিদায়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের কাছ থেকে কোনো সংবর্ধনা বা আনুষ্ঠানিকতা পাননি তিনি। অনেকটা চুপিসারে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
দীর্ঘ আটবছর ভিসির পদে থাকা অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের মেয়াদ শেষ হয় গত ১ মার্চ। তবে তৃতীয় মেয়াদে উপাচার্য পদে আসার জন্য দেনদরবার শুরু করেন তিনি। সাবেক এই উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ শিক্ষকরা সাফাই গাইতে থাকেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে খাতিরের কারণে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ফের উপাচার্যের দায়িত্ব পাবেন। তবে গত ১৭ এপ্রিল উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নূরুল আলমকে সাময়িক মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এরপরই অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়। নতুন উপাচার্য নিয়োগের আগেও অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অনুসারী শিক্ষকদের দহরম মহরম ছিল। তবে বাসভবন থেকে বিদায়ের আগে উপাচার্যের সমর্থক শিক্ষকদের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা পাননি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
তিনি যে শিক্ষক সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেছেন সেই ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ থেকেও বিদায়কে স্মরণীয় করতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উল্টো তাদের অনেকেই এখন ভোল পাল্টাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক খালিদ কুদ্দস বলেন, অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেকারণে তাকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সবাই মিলে বিদায় জানাতে পারিনি। অসুস্থ থাকায় তিনি বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের ইফতার মাহফিলেও আসতে পারেননি।
তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, বাসভবন থেকে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিদায়ের আগে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বাসভবন ছেড়েছেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) আব্দুর রহমান বলেন, শুনেছি ফারজানা ম্যাডাম কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। তিনি কবে বাসা ছেড়েছেন তা বলতে পারছি না। তবে সোমবার বিকেলে ম্যাডামের ছেলে আর ছেলের বউ আমাদের কাছে উপাচার্যের বাসভবন বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন। বাসার কিছু কাজ করার আছে। এরপরই হয়তো নতুন উপাচার্য বাসভবনের উঠবেন।
বিজ্ঞাপন
এইউ