রোববার, ৫ মে, ২০২৪, ঢাকা

বাড়ছে দাম, ঘামছে জনগণ

আহমাদ সোহান সিরাজী
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩, ১১:২৭ এএম

শেয়ার করুন:

বাড়ছে দাম, ঘামছে জনগণ

দিন দিন সবকিছু সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারের উত্তাপে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ক্রেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্য বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। আসন্ন রমজান ঘিরে আরেক দফা বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আর তাতে ঘামছে বাজার করতে যাওয়া জনগণ।

সারাদেশের মতো রাজধানীর পার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চল সাভার ও এর আশপাশের এলাকার চিত্রও ভিন্ন কিছু নয়।


বিজ্ঞাপন


সাভারের নবীনগর এলাকায় বাজার করতে আসা রাকিব হোসেন নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, আমরা যারা মধ্যবিত্ত রয়েছি তাদের সুখ-দুঃখ অনেকটাই নির্ভর করে বাজারের জিনিসপত্রের দামের ওপর। বাজারে দাম কিছুটা কম থাকলে পরিবার নিয়ে দুটো ভালোমন্দ খাওয়া যায়। কিন্তু এখন সবকিছুর দাম এতটাই আকাশছোঁয়া যে ভালোমন্দ দূরের কথা, তিনবেলা ভাতের যোগান দেওয়াটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। মাসের শুরুর দিকে হাতে টাকা থাকলেও শেষের দিকে এসে ধার দেনা করে চলতে হয়।

shob

পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিক হালিমা আক্তার বলেন, আগে আমাগো গরিব মাইনষেরা যেডি খাইতাম সেগুলার দামও এখন ম্যালা বাড়ছে। ফার্মের মুরগি কন আর পাঙাশ মাছ কন, সবকিছুর দামই এখন আগুন। বাজার ভরা জিনিস কিন্তু দামের চোটে কিছুই কিনতে পারি না।

ক্রেতাদের দাবি, বাজার মনিটরিংয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা উচিৎ।


বিজ্ঞাপন


এদিকে রমজানকে কেন্দ্র করে যেন আরও লাফিয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের দামের ব্যারোমিটারের কাঁটা। সপ্তাহের ব্যবধানে সাভারের সবচেয়ে বড় বাজার নামাবাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে দশ টাকা, সয়াবিন তেলও কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ৮০ টাকার আদা ১০০ টাকা, ১০-২০ টাকা বেড়েছে সব ধরনের ফলের দামও। কিছুটা সহনীয় আছে ছোলা ও মশুর ডাল। ৫ টাকা কমে এখন প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা এবং ৯৫ টাকার মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে।

murgi

অপরদিকে মৌসুমের শেষে শীতের সবজির দাম ১০-২০ টাকা করে বেড়েছে। গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি বাজারে এসেছে তা অনেকটাই সাধারণের নাগালের বাইরে। প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, কচুরলতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু ৬০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে প্রায় মাসখানেক ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। বর্তমানে ব্রয়লার ২৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহ খানেক আগেও ছিল ২৪০ টাকা। আর এক মাস আগে বিক্রি হতো ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। একইভাবে ডিমের দাম মাসের ব্যবধানে হালিতে ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা।

সাভার বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজারের মুরগী ব্যবসায়ী মো. সবুজ ঢাকা মেইলকে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মুরগির সরবরাহ কম থাকায় ব্রয়লারের দাম বেড়েছে। ক্রেতাদের মতো আমরা খুচরা বিক্রেতারাও বিপাকে পড়েছি। আগে এই সময়ে দৈনিক ১৫০-২০০ কেজি মুরগি বিক্রি করতাম, এখন দিনে মাত্র ৫০-৬০ কেজি বিক্রি হয়।

bazar

মাছের বাজারও গরম। তেলাপিয়া-পাঙাশের মতো চাষের মাছের কেজিও ২০০-২২০ টাকা। অন্য মাছের দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দেখা গেছে। মাঝারি সাইজের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৮০ টাকা কেজি দরে, কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৬০০ টাকা এবং ছোট ট্যাংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

গরুর মাংসের দাম বাজারভেদে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার তদারকিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে না পারে।

প্রতিনিধি/এমএইচএম/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর