বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে ‘কঠোর’ সরকার

ওয়াজেদ হীরা
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৩ এএম

শেয়ার করুন:

মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে ‘কঠোর’ সরকার

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৩ বা ২৪ মার্চ রোজা শুরু। আমাদের দেশের মানুষ সাধারণত অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজানে একটু ভালো খাবার-দাবার আয়োজনের চেষ্টা করে। তাছাড়া সিয়াম সাধনার এই মাসের শেষেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। সবমিলে এই সময়টায় খরচের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু যুদ্ধ, ডলার সঙ্কট, বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়াসহ নানা কারণে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। ফলে স্বস্তি নেই বাজারে। নিত্যপণ্যসহ সব জিনিষের দামই বাড়তি। যদিও বাজারে পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও রোজা উপলক্ষে দাম আরও বাড়ার শঙ্কা।

Specialইতোমধ্যে সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা রোজায় দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ রেখেছেন। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন নির্দেশনা। বিভিন্ন দফতর থেকে দাম নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সাথে জেলা প্রশাসকদেরও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয় সে জন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বেশি বেশি পণ্য কিনে ঘরে মজুদ না করারও আহবান জানিয়েছেন তিনি।

Specialবাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ব্যবসায়ীদের বলব, আপনারা একটু সংযমী হোন। যা ন্যায্যমূল্য সেটাই নেবেন, আমরা সারাদিন পাহারা দিতে পারব না। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম, আপনারা দায়িত্ব নেবেন কি না। অন্যদিকে ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজান সামনে রেখে হুমড়ি খেয়ে কেনার কিছু নেই। একটু সাশ্রয়ী হোন। পাঁচ কেজি পেঁয়াজের জায়গায় আপনারা ২০ কেজি কেনা শুরু করলে বাজারে হুট করে সরবরাহ চলে আসবে না।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকারের ১০টি সংস্থা মাঠে থাকবে এবং ১৫টি পণ্যের দাম বেঁধে দিতে কাজ চলছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহে মাঠে থাকবে টিসিবি।

Specialজাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি বাজার মনিটরিংয়ে। সারাদেশে ৫০টি টিম কাজ করবে। আর ঢাকায় আমাদের তিনটি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি টিম কাজ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বাজারে কঠোর মনিটরিংয়ের। মনিটরিংয়ে বাজারের যে কমিটি আছে তাদেরও সম্পৃক্ত করেছি। গাফিলতি থাকলে বাজার কমিটি বাতিল করব।


বিজ্ঞাপন


এদিকে রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কঠোর নজরদারি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। রমজানে যাতে জিনিসপত্রের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো না হয় সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে সরকার। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

Specialএছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), কৃষি বিপণন অধিদফতর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশনের মনিটরিং টিমও কাজ করবে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সদর দফতর থেকে সারা দেশের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে ভার্চুয়ালি সভা করে রোজায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবারের মতো এবারও বাজারগুলোতে পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে।

পুলিশের পাশাপাশি রমজানে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতও কাজ করবে। এ ব্যাপারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঢাকা মেইলকে বলেন, এবারও র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করবে।

Specialএদিকে গত বছরগুলোর চেয়ে এবার অনেক বেশি খাদ্যশস্য ও নিত্যপণ্য মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

অবৈধ মজুদ এবং বাজারে সঙ্কট সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রোজার সময় মজুদ করার চেষ্টা করবে, মানুষকে দুর্ভোগে ফেলার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাতে মজুদ করতে না পারে সেজন্য কড়া নজরদারি থাকবে।

ডব্লিউএইচ/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর