রোববার, ৫ মে, ২০২৪, ঢাকা

সুখবর নেই খেজুরের বাজারে

মুহা. তারিক আবেদীন ইমন
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩, ১০:০৮ এএম

শেয়ার করুন:

সুখবর নেই খেজুরের বাজারে

পবিত্র মাহে রমজানে ইফতারিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে খেজুর। সারা বছর যা খেজুর বিক্রি হয় তার চেয়ে বেশি খেজুর বিক্রি হয় এই এক মাসেই। চিনি ছোলার বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও আপাতত সুখবর নেই খেজুরের বাজারে। প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি খেজুরের দাম। এ জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন পাইকার ও আড়তদারদের। আর আমদানিকারকরা বলছেন ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতেই বেড়েছে বিদেশি ফলটির দাম। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও কম।

Specialরাজধানীর পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম এলাকায় বসে রাজধানীর বৃহৎ খেজুরের মার্কেট। প্রায় সব ধরনের খেজুর এখানে পাওয়া যায়। নানা ধরনের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে রয়েছে, মমতাজ মরিয়ম, আজওয়া, আম্বার, মাবরুম, জাহেদি, কালমি ইত্যাদি। যা আসে সৌদি আরব ছাড়াও জর্ডান, মিশর, দুবাই, আলেজেরিয়া, তিউনিশিয়া, লেবানন, পাকিস্তানসহ বেশকিছু দেশ থেকে। জাতভেদে এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। যা গেল বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেকেরও বেশি।


বিজ্ঞাপন


বিক্রেতারা বলছেন, গত বছর মমতাজ-মরিয়ম জাতের খেজুরের পাঁচ কেজির কার্টন ১৫০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর বাজারে তা ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ফরিদা জাতের খেজুরের পাঁচ কেজির কার্টন ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। এ বছর ইতোমধ্যে তা বেড়ে সর্বনিম্ন হয়েছে ১৫০০ টাকা। ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

Specialআমান নামে এক খেজুর বিক্রেতা বলেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজানে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে। এই সময় আড়তদাররাও নিজেদের মনমতো খেজুরের দাম ধরে। আমাদেরকে বেশি দামে কিনতে হয়। আমাদের কেনা বেশি দামে পড়লে আমরা কম দামে দেব কিভাবে। এমনিতেই তো কাস্টমার কম। আমরা তো বিক্রি করতে পারলেই লাভ।

আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবার খেজুরের দাম বেড়েছে। তাছাড়া এবার খেজুর আমদানিতে ঋণপত্র খোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। আগে এলসি খুললে ব্যাংকে বাকি রাখা যেত। এখন বাকির সিস্টেম নাই। আগে টাকা দিতে হয়, পরে সিরিয়ালে থাকো। ১০ কনটেইনার চাহিদা থাকলে দেয় দুই কনটেইনার। এক আমদানিকারক বলেন, কোনো ব্যাংক যদি এলসি না দেয়, তাহলে খেজুর-ফল সব জিনিসেরই বাজারে সঙ্কট থাকবে। এতে দাম এমনিতেই বেড়ে যাবে। তাই রামজান সামনে রেখে সঙ্কট যেন না হয় সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।

Specialদেশে সারা বছর খেজুরের চাহিদা এক লাখ টন হলেও শুধু রমজানে এর চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টনে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, গত তিন মাসে (নভেম্বর-জানুয়ারি) খেজুর আমদানি হয়েছে ২২ হাজার ৭০০ টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি ছিল ৪০ হাজার ৮০০ টনের বেশি। এক বছর আগের একই সময়ের চেয়ে এ বছর আমদানি প্রায় ৪৫ শতাংশ কমেছে। দাম বাড়ার জন্য এলসির অপর্যাপ্ততা এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকেই দুষছেন ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। দাম কমাতে শুল্ক ছাড়ের পরামর্শ বাজার বিশ্লেষকদের।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যে যুক্ত হয়েছে ছোলা ও খেজুর।  ইতিমধ্যে সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রি শুরু করছে সরকারি এ সংস্থাটি। এ বছরও সংস্থাটি সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডালের সঙ্গে রমজান উপলক্ষে খেজুর ও ছোলা বিক্রি করবে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার খেজুরের দাম কেজিতে ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। টিসিবি সূত্র জানায়, এবার একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি করে চিনি, ছোলা ও খেজুর কিনতে পারবেন। পণ্য বিক্রি করা হবে টিসিবির ডিলারদের দোকান বা নির্ধারিত স্থায়ী স্থাপনায়। সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাদের নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী ডিলাররা এ বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

টিএই/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর