শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

‘যারা দুইটা মুরগি কিনতেন তারা একটা কিনতাছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৩, ১১:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

‘যারা দুইটা মুরগি কিনতেন তারা একটা কিনতাছে’

‘১৬-১৭ বছর ধরে মুরগির দোকানে কাম করতেছি এমন দাম দেখি নাই। সপ্তাহে হালি হালি মুরগি কেনা কাস্টমার লজ্জায় কাজের বুয়ারে বাজারে পাঠাইতেছে। যারা দুইটা মুরগি কিনতেন তারা একটা কিনতাছে।’

শনিবার (১৮ মার্চ) কথাগুলো বলছিলেন পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের মুরগি বিক্রেতা সেলিম উদ্দিন।


বিজ্ঞাপন


এই দোকানির সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, মুরগির দাম ২০০ টাকা কেজি হওয়ার পর থেকে বিক্রিতেও টান পড়েছে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় নিয়মিত যারা ব্রয়লার কিনতেন তারাও এখন আসা কমিয়ে দিয়েছেন। আগে ২৫০ টাকায় যেখানে প্রায় দুই কেজি ওজনের মুরগি মিলত, এখন ১ কেজি কিনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

dm

এদিকে ব্রয়লারের সঙ্গে পাকিস্তানি কক, লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে অনেক। পাকিস্তানি ছোট মুরগি কেজি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে কিছুদিন। এখন কেজি ৪০০ টাকা ছুঁইছুঁই। ‘বুড়ো মুরগিখ্যাত’ লেয়ারের কেজিও ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে বেশ কিছুদিন আগে।

এই বাজারের একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা আগে দেশী মুরগী কিনতেন তারা অনেকেই কক, লেয়ারে ঝুঁকছেন। কেউ আবার অন্য মুরগির সঙ্গে ব্রয়লারও কিনছেন।


বিজ্ঞাপন


মুরগি বিক্রেতা সেলিম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কেউ বুঝতেছে না এত দাম কেন মুরগির? আড়তে গেলে মুরগি পাই না। গ্রামের খামারেও নাকি মুরগি নেই। শুনতাছি যারা বাচ্চা দিত তারা বাচ্চার দাম বাড়াইছে। আবার সিন্ডিকেট কইরা মুরগির দামও বাড়াইছে।’

dm

কারা এর সঙ্গে জড়িত- এমন প্রশ্নের উত্তর কেড়ে নিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘কারা আবার? বড় বড় করপোরেট কোম্পানি বাকিদের বিপদে ফেলেছে।’

এসময় সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পাশে দাঁড়ানো একজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নিজেরা বাসায় ভালো মন্দ খেয়ে থাকতে পারি। মেহমান আসলে বড় সমস্যা হয়। কষ্ট হলেও আয়োজন করা লাগে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ক্রেতা বলেন, ‘করোনার সময়ের চেয়ে তো কঠিন অবস্থা এখন চলতেছে না। তখনও তো মাছ-মুরগি এত দাম দিয়ে কিনতে হয় নাই। এখন কেন এত দাম? এটা খুঁজবে কে?’

dm

ঢাকার বহু পুরোনো রায়সাহেব বাজারে ২৫টির মতো মুরগি বিক্রির দোকান আছে। একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাম বাড়ার পর ক্রেতা কিছুটা কমেছে। যারা সবসময় একসঙ্গে অনেকগুলো মুরগি নিতেন তারা এখন পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। এতে বিক্রি কমে গেছে।

শরিফুল ইসলাম নামের আরেকজন দোকানি বিক্রির হালচাল জানাতে গিয়ে ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কয়দিন আগে শবে বরাত গেলো সন্ধ্যার সময়ও মুরগি রয়ে গেছে। এইদিনে আগে দুপুরের পর আর মুরগি পাওয়া যেত না। এখন পাবলিক দুইটার দামে একটা নিতে পারতেছে। আগের মতো কেমনে কিনবে।’

মূল আড়ত থেকে আগের মতো মুরগি কেনা যাচ্ছে না বলেও জানান ৩০ বছর ধরে এই বাজারে মুরগি বিক্রি করা এই বিক্রেতা।

বিইউ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর