শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

লাগামহীন ফলের বাজার

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:১১ এএম

শেয়ার করুন:

লাগামহীন ফলের বাজার

ডলার সঙ্কটে এলসি বন্ধ থাকায় বিদেশি ফল আমদানি কমে এসেছে। ফলে বাজার এখন দেশি ফলের দখলে। কিন্তু দেশি ফলের দামও এখন সাধারণের নাগালের বাইরে। রোজা সামনে রেখে যেন আরও লাফিয়ে বাড়ছে ফলের দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা ফলের চাহিদা কম-বেশি সবসময় থাকে। বিশেষ করে সুপারশপগুলোতে রয়েছে নির্ধারিত ক্রেতা। দাম যতই হোক তারা ক্রয় করে থাকেন। কিছুদিন ধরে প্রয়োজনের তুলনায় ফল আমদানি কম হওয়ায় ক্রেতারা বাধ্য হয়ে ঝুঁকছেন দেশি ফলের দিকে। চাহিদা বেশি থাকায় দেশি ফলের দামও কিছুটা বেশি।


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, রোজা আসতে না আসতেই লাগামহীন হয়ে পড়েছে ফলের বাজার। এক মাস আগেও দাম সহনশীল ছিল বলছেন তারা। বর্তমান বাজারে ফল জনসাধারণের নাগালে নেই। যেন রোজা সামনে রেখে উৎসব করে বাড়ানো হয়েছে দাম। রোজায় বেড়েছে- এমন প্রশ্ন যেন কেউ তুলতে না পারে।

Specialহাজারীবাগ পাইকারি বাজারের আড়তসহ রাজধানী ঢাকার আজিমপুর, নিউমার্কেট, নাজিরাবাজার, নবাবগঞ্জ বাজার খুচরা দোকানিদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। যেখানে গত মাসেও ২২০ টাকা ছিল বলছেন দোকানিরা। ভালো মানের আমদানি করা গোল্ডেন আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকায়। এছাড়া ফুজি আপেল ক্রয়ে গুণতে হচ্ছে ৩০০ টাকা, গালা আপেল ৩৫০ টাকা।

একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খেজুরের দাম। মোটামুটি ভালো মানের খেজুর কিনতেও গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা। আমিরাতের নাগাল, দাবাস ও লুলু খেজুরের দাম ছাড়িয়েছে ৬০০ টাকা। সৌদি আরবের আজোয়া, আম্বার কিংবা জর্ডানের মরিয়ম খেজুর কিনতে হলে গুণতে হচ্ছে হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি।


বিজ্ঞাপন


Specialরাজধানীর আজিমপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি ভ্যানে ফল বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতাদের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, তাদের কাছে সবচেয়ে কম দামের ফল হচ্ছে পেয়ারা। যা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। অন্যদিকে নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, পাকা পেঁপে ৯০- ১০০ টাকা, মাল্টা ২২৪- ২৫০ টাকায়। আঙুর বিক্রি হচ্ছে ২৪০-৩০০ টাকায়। লাল আঙ্গুরের দাম আরও চড়া। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়। ডালিম ৪৫০-৪৮০ ও কমলা (ভারতীয়) ২৪০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে কলার দামও বেশ চড়া দেখা গেছে। প্রতি ডজন সবরি কলা মিলছে ১২০ টাকায়। চাপা কলা ৬০-৮০ টাকায়, সাগর কলা ৮০-১২০ টাকায়।

বাজারে প্রচুর তরমুজ দেখা গেলেও দাম নিয়ে রয়েছে ক্রেতাদের অসন্তোষ। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। সস্তায় মিলছে ছোট-বড় আনারস। ছোট আকারের আনারস পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়।

Specailনগরীর নবাবগঞ্জ বাজারে কথা হয় ক্রেতা মাহবুবুর রহমানের সাথে। আলাপকালে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, যে হারে দাম বাড়ছে যেন ফলের বাজারে আগুন লেগেছে। দেশি ফলের দাম বিদেশি ফলের দামে গিয়ে ঠেকেছে। কেনার ইচ্ছা থাকলেও সাধ্য নেই। এ ক্রেতা বলেন, পরিবারে লোকসংখ্যা বেশি। আগে যেখানে ১ কেজি ফল কিনতাম, এখন অর্ধেক কিনি। বছরে একবার পরিবারকে খাওয়াতে না পারলে দুঃখ থেকে যায়।

হাজারীবাগ সিকসন ফলের পাইকারি আড়তের আড়তদার আল আমিন বলেন, রমজানের আগেই ফলের দাম বেড়েছে। বিক্রিও কমেছে। দাম আরও বাড়তে পারে। আগে যে দোকানি দুই চারশ কেজি মাল নিতেন তিনি এখন এক থেকে দেড়শ কেজির বেশি নেন না। লাগামহীন ফলের বাজারের কারণ জানতে চাইলে বলেন, ফলের আমদানি বেশ কমেছে নানা কারণে। অন্যদিকে বিশ্ববাজারেও ফলের দাম চড়া।

কেমন দাম বেড়েছ জানাতে গিয়ে এ আড়তদার বলেন, কিছুদিন আগেও স্ট্রবেরি (উন্নত মানের) ৫০০ টাকা কেজি ছিল। আজ পাইকারি কিনেছি ৬০০ টাকায়। কালো আঙ্গুর ও মাল্টার দাম লাফিয়ে বাড়ছে। দুই-একটা পদ ছাড়া প্রতিটি ফলের দাম বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিএইচডি/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর