বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মধ্যবিত্তরা খুঁজছে ছোট মুরগি, কমেছে বিক্রিও

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

মধ্যবিত্তরা খুঁজছে ছোট মুরগি, কমেছে বিক্রিও

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝে লাগাম ছাড়া ঘোড়ার পিঠে চড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। আগে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় যেখানে ব্যাগভর্তি বাজার করা যেত, সেখানে এখন হাজার টাকায়ও ভরে না বাজারের ব্যাগ। আবার বৈশ্বিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটও দাম বাড়ানোর পায়তারা করছেন। 

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই তালিকায় আছে গরিবের ব্রয়লার মুরগিও। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি ব্রয়লারের দামও বেড়েছে কয়েক গুণ।


বিজ্ঞাপন


দুই মাস আগেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় কেজিতে। সেই মুরগিই এখন রেকর্ড দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজিতে। এমনকি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগিও।

Specialবিক্রেতারা বলছেন- এখন মানুষ বাজারে এলেই ছোট মুরগি খুঁজে। এ কারণে বিক্রিও কমেছে অনেক।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, এস সপ্তাহ আগে ২১০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়ালার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা কেজিতে। সেই সঙ্গে দুইদিন আগে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা। এছাড়াও দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। যদিও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।

মুগদা এলাকার দোকানি নাজমুল বলেন, ‘এই দামে মুরগি কখনও বিক্রি করিনি। মানুষ এখন ছোট মুরগি খুঁজছে। বেচা-বিক্রিও কমে গেছে।।’


বিজ্ঞাপন


Specialএকই এলাকার আরেক দোকানি বলেন, ‘বাজারে বয়লার মুরগির ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যে কারণে চাহিদামতো আমরা ব্রয়লার মুরগি পাচ্ছি না। যেটুকু পাচ্ছি বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।’

এই বিক্রেতার দাবি, ‘আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি আমার কেনা পড়ত ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। তা বিক্রি করেছি ১৩০-১৪০ টাকায়। এখন এক কেজি মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় কিনে ২৪০-২৫০ বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার গাড়িভাড়া বেড়েছে। এতে আমাদেরও খুববেশি পর্তা হয় না।’

এদিকে, মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে নাজেহাল নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকাই তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। মুরগি কিনতে আসা শামসুল বলেন, ‘গরুর মাংস আমার পছন্দ। একসময় গরুর মাংস ছাড়া অন্য মাংস তেমন কেনা হতো না। গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় সোনালি মুরগি খাওয়া শুরু করলাম। সেটি ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে ব্রয়লার মুরগি খেতে শুরু করি। এখন ব্রয়লার মুরগির দামও নাগালের বাইরে চলে গেছে। ইচ্ছা থাকলেও এখন আর আগের মতো সপ্তাহে একদিন মাংস খাওয়া হবে না।’

Specialএ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল হান্নান ঢাকা মেইলকে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বাড়ছে, বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি, মাছ-মাংস এমনকি ডিমসহ ন্যূনতম যে আমিষ বা প্রোটিন তা নিম্নবিত্ত এমনকি সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সাধারণ মানুষ এসব নিয়মিত খেতে পারছে না।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশনের এই কর্মকর্তা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির একটা চরম প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর পড়তে পারে। স্বাভাবিকভাবেই পুষ্টিহীনতার একটা শঙ্কা রয়েছে। কাজেই সরকারের উচিৎ যে কোনো উপায়ে জরুরি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা আমদানি করে হোক আর যেভাবেই হোক।

টিএই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর