শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ব্রয়লার এখন গরিবের নাগালের বাইরে, হতাশায় মধ্যবিত্ত

তোফায়েল হোসেন জাকির
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৪৯ এএম

শেয়ার করুন:

ব্রয়লার এখন গরিবের নাগালের বাইরে, হতাশায় মধ্যবিত্ত

গরু-ছাগলের মাংস সবার প্রিয় হলেও আকাশচুম্বি দামের কারণে নিম্নআয়ের মানুষেরা এর স্বাদ নিতে পারতেন না। ফলে ব্রয়লার মুরগিই ছিল তাদের ভরসা। এজন্য ব্রয়লার মুরগিকে ‘গরিবের মাংস’ হিসেবে আখ্যা দিতেন অনেকে। কিন্তু একমাসের ব্যবধানে সেই ব্রয়লারের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। যার ফলে এই মাংসও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে গরিব মানুষদের। মধ্যবিত্তরাও এখন চড়া দামে ব্রয়লার কিনতে হতাশায় ভুগছেন। এক সময়ের গরিবের ব্রয়লার এখন ধনিদের মাংস পরিণত হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) গাইবান্ধার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লারসহ অন্যান্য জাতের মুরগির দামে ঊর্ধ্বগতি। মাংসের অস্বাভাবিক দামের কারণে ক্ষুব্ধ সাধারণ ভোক্তারা।


বিজ্ঞাপন


বর্তমান বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২২০ টাকা দামে। অথচ একমাস আগে এর দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। শুধু ব্রয়লারেই নয়, বাজারে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, গরু মাংস ৬৬০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দিনে দিনে সবধরনের নিত্যপণ্যসহ মুরগির অস্বাভাবিক দামে হতাশ সাধারণ মানুষ। অনেকে মাংস খাওয়া ছাড়ছেন।

গাইবান্ধার পুরাতন বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা নজরুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘আয়-রোজগার কম হওয়ায় মাসে একদিনও মাংস খেতে পারি না। তবে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এলে কম দামে ব্রয়লার মাংস কিনতাম। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়া এখন তাও কেনা সম্ভব নয়।’

জমির উদ্দিন নামের এক দিনমজুর বলেন, ‘গত কোরবানি ঈদে অন্যের দেওয়া মাংস খেয়েছিলাম। এরপর থেকে আর স্বাদ নিতে পারিনি। পরিবারের আবদারে আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু বেশি দামের কারণে কেনা হলো না। আমাদের পেটে আর কখনও গোশত ঢুকবে না।’

সাদুল্লাপুর বাজারে আসা মেহেদুল আলম নামের এক কৃষক বলেন, ‘আগে মাসে এক-দুদিন গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া হতো। এরই মধ্যে এসব মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা খাওয়া বাদ দিয়েছি। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধিতে এটাও এখন খাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।’  

সাদুল্লাপুর বাজারের ব্রয়লার-লেয়ার মুরগি বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম জানান, গত দুই সপ্তাহ থেকে ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগির বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইদানীং এই মাংস কিনছেন ধনিরা। আর সাধারণ মানুষ দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এতে করে লোকসানের শিকার হতে হচ্ছে।

পোল্ট্রি খামারি খাজা মিয়া বলেন, বাচ্চা-ফিড-ওষুধ ও অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খামার বন্ধ হয়েছে। তাই মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন হচ্ছে কম। এ কারণে দাম বেড়েছে অনেকটা। তবুও খামার ব্যবসায় ভাটা পড়ছে।

গাইবান্ধা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালাম তালুকদার বলেন, মুরগিসহ সবধরনের খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে নজদারি রাখা হয়েছে। এ নিয়ে অভিযানও করা হচ্ছে। 

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর