দেশে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে সরকার। জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ পাসের পর এই কর্তৃপক্ষ গঠন করা হলো।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাববীর আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। সবশেষ গত ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আইনটির অনুমোদন দিলে পরে এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের সর্বস্তরের জনগণকে টেকসই পেনসন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩’ এর ৪(১) ধারা অনুযায়ী জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হলো।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এ বলা আছে, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য থাকবে। পাশাপাশি ১৬ সদস্যের একটি পেনশন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। আর এই পর্ষদের চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এই কর্তৃপক্ষের সদস্য হবেন। আর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
বিজ্ঞাপন
এই আইন অনুযায়ী, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এ পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক।
এতে আরও বলা হয়েছে, পেনশনে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
এছাড়াও পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। আর পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।
/আইএইচ