বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

মানুষের নগদ অর্থ হাতে রাখার প্রবণতা বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

মানুষের নগদ অর্থ হাতে রাখার প্রবণতা বেড়েছে

মানুষের নগদ অর্থ হাতে রাখার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। মূলত মূল্যষ্ফীতি বৃদ্ধি ও ব্যাংক খাতের নেতিবাচক খবরে এমন প্রভাব পড়ছে। গত এক বছরে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। 

সংশ্লিষ্টরা জানায়, উচ্চ মূল্যষ্ফীতির কারনে জিনিসপত্র কিনতে আগের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হচ্ছে। যে কারনে মানুষ নগদ টাকা বেশি হাতে রাখছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি কিছু ব্যাংকে অনিয়ম হওয়ায় ব্যাংক খাতের ওপর মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। যার বিরুপ প্রভাব পড়েছে ব্যাংক খাতে। এটি অর্থনীতির জন্য শুভ নয়। 
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ব্যাংক খাতের বাইরে মানুষের কাছে নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। যেটি ২০২২ সাল শেষে ব্যাংক খাতের বাইরে বা মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখ ৬৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫৭ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। 


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৯ সাল শেষে ব্যাংক খাতের বাইরে নগদ অর্থ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, যা ২০২০ সাল শেষে বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৮৭ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে নগদ অর্থের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে এ বৃদ্ধির হার ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০২১ সাল শেষে ব্যাংক খাতের বাইরে মানুষের হাতে নগদ অর্থ ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ''সম্প্রতি মূল্যষ্ফীতি বৃদ্ধির কারনে মানুষের বাড়তি অর্থ ব্যয় হচ্ছে অনেক বেড়েছে। তাই মানুষের বাড়িত খরচ হচ্ছে। বাড়তি খরচ মেটাতেই টাকা হাতে রাখছে মানুষ। তবে এ টাকা ঘুরে ফিরে ব্যাংকেই যায়।

উল্লেখ্য, কোভিড মহামারীর সময় থেকে নগদ অর্থ হাতে রাখার প্রবণতা বেড়েছিল। কারণ মানুষ আতঙ্কে হাতের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থ রেখেছে। তবে মহামারী চলে গেলেও নগদ অর্থ ঘরে রাখার প্রবণতা থেকে বের হতে পারেননি বেশির ভাগ মানুষ। কোভিড পরবর্তী সময়ে নতুন করে যুক্ত হয়েছে কয়েকটি ব্যাংকের সাম্প্রতিক আর্থিক কেলেঙ্কারি ও তারল্য সংকটের ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত নেতিবাচক খবর মানুষের মনে ব্যাংকের প্রতি অনাস্থা তৈরি করেছে। ফলে তারা ব্যাপকহারে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে জমা রাখছেন বা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করেছেন। তাই সার্বিকভাবে আগের তুলনায় মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেশি বেড়েছে।

মানুষের হাতে নগদ অর্থ ধরে রাখার প্রবণতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। গত একবছরে ব্যাংক খাতের বাইরে মুদ্রার প্রবাহ বেড়েছে ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। মানুষের হাতে মুদ্রার প্রভাব বেড়ে যাওয়ার ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। এ জন্য উদ্বৃত্ত তারল্য কমেছে ব্যাংক খাতের। এর বাইরে নগদ অর্থ বেড়ে যাচ্ছে। মূলত অনেকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যাংকে রাখতে সাহস পাচ্ছেন না। কেউ কেউ নিজেদের কাছে টাকা ধরে রাখছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা।


বিজ্ঞাপন


এইচআর/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর