শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মুদ্রানীতির কঠোর বাস্তবায়ন চায় ডিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

মুদ্রানীতির কঠোর বাস্তবায়ন চায় ডিসিসিআই

মুদ্রানীতির কঠোর বাস্তবায়ন দাবি করেছে ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত ২০২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় পর্বের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতির প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।


বিজ্ঞাপন


এতে বলা হয়, ২০২৩ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন মেয়াদের জন্য সরকারি ঋণের প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। যা গত ২০২২ অর্থবছরের জুন-ডিসেম্বর মেয়াদে ছিল ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

সরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা বেসরকারি খাতে নতুন ঋণ প্রবাহ ও বিনিয়োগকে সংকুচিত করতে পারে উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়, সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমানোর লক্ষ্যে সরকারকে সুশাসন নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি ব্যয় হ্রাস করতে হবে। এছাড়াও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের মধ্যে সরকারকে অপরিহার্য প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

>> আরও পড়ুন: ছয় মাসে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ৩২২৪৯ কোটি টাকা


বিজ্ঞাপন


ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোক্তা পর্যায়ে ঋণের সুদের হারের সীমা শিথিলকরণের প্রস্তাব এবং সঞ্চয়ের ওপর সুদহারের সীমা প্রত্যাহার করার ফলে ব্যাংকিং খাতে সঞ্চয় ও তারল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিবৃতিতে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা আনয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ ক্রমান্বয়ে বাজারভিত্তিক এবং একক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার চালু করার প্রত্যাশায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থপাচার রোধে এলসির মাধ্যমে আমদানি ব্যয় মেটানোর পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।

ডিসিসিআই সভাপতি মনে করেন, যে সকল এলসির মূল্য ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি সেগুলোকে তদন্তপূর্বক পরিশোধ করা গেলে তা অর্থপাচার রোধে সহায়ক হবে। তবে বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি মার্জিনের শর্তাবলী শিথিল করতে হবে এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে এলসি মার্জিনের শর্তাবলী শিথিল করলে তা স্থানীয় ও রফতানীমুখী শিল্পের উৎপাদনকে তরান্বিত করবে বলেও মত প্রকাশ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতিতে সিএমএসএমই সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি কৃষি, সিএমএসএমই এবং আমদানি বিকল্প শিল্পখাত যেন সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণপূর্বক বিনিয়োগ করতে পারে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বাগত জানান। সেই সঙ্গে বলেন, এই সিদ্ধান্ত সিএমএসএমইর দ্রুত পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করবে।

>> আরও পড়ুন: মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ

নন-পারফর্মিং লোন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও কিছু গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নন-পারফর্মিং লোন কমানো ও সুশাসন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। কীভাবে নান-পারফর্মিং লোন কার্যকরভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও সুনির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলে তা মুদ্রানীতির জন্য সহায়ক হতো। যেহেতু ক্রমবর্ধমান নন-পারফর্মিং লোন বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ এবং প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, সে কারণে নন-পারফর্মিং লোনের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষভাবে বিবেচনার তাগিদ দেন তিনি।

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক অভ্যাসগত ঋণ খেলাপি হওয়ার নিদিষ্ট কারণগুলো চিহ্নিত করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বিদ্যমান মামলাগুলোর ব্যাকলগ কমাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করতে পারে। এর পাশাপাশি কার্যকরভাবে এডিআর পদ্ধতি চালু করতে বিদ্যমান আইনগুলোর দ্রুত সংস্কারের প্রস্তাবও করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

বিবৃতিতে বৃহৎ ও খেলাপি ঋণ কমানোর স্বার্থে প্রতিনিয়ত নজরদারির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘স্পেশাল মনিটরিং সেল’ গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এটিকে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলেও মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার। সেই সঙ্গে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার, স্থানীয় ব্যাংক কর্তৃক ফি গ্রহণ না করা এবং উত্তোলনপূর্ব অনুমোদন না রাখার ব্যবস্থাকেও স্বাগত জানান।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেশকিছু ইতিবাচক দিক-নির্দেশনা রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারির মাধ্যমে একটি সময়োপযোগী বাস্তবায়ন কৌশল মুদ্রাবাজার ও অর্থনীতির মূল লক্ষ্য অর্জন করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

টিএই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর