ভোক্তা ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হারের নীতি শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বর্তমান পর্যায় থেকে ঊর্ধ্বে ৩ শতাংশ পয়েন্ট পর্যন্ত সুদের হার বাড়াতে পারবে। সেই সঙ্গে আমানতের সুদ হারের সীমা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় এই তথ্য জানানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি (জানুয়ারি-জুন) ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে এখন থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ দিতে পারবে। এতদিন এক্ষেত্রে সুদের সর্বোচ্চ হার ছিল ৯ শতাংশ।
একইভাবে আমানতের ক্ষেত্রে প্রদেয় ন্যুনতম সুদের হারও প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক খাতে সুদের হার ঋণে সর্বোচ্চ ৯ ও আমানতে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ কার্যকর আছে। ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে সুদহার বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর দেশের অর্থনীতির সূচকগুলোতে বেশ পরিবর্তন এসেছে।
এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে তিনবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংক ঋণের সুদহার না বাড়িয়ে কেবল রেপোর সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পদক্ষেপ কতটা কাজে লাগছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
বিজ্ঞাপন
ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির বাড়তি চাপ সামাল দিতে বাজারে অর্থপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখন থেকে নীতি সুদহার নির্ধারিত হবে ৬ শতাংশ। এতদিন যা ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর পাশাপাশি ঋণের সুদহার পুরোপুরি তুলে না দিলেও ভোক্তাঋণে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ সুদ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো।
মুদ্রানীতিতে রেপো সুদ হার বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৫ দশমিক ৭৫ ভাগ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে শতকরা ৬ ভাগে পুননির্ধারণ করা হয়েছে। রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪.২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ লক্ষ্য একই রেখেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা৷ আগামী জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বরের মুদ্রানীতিতেও যা ছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ।
ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট, বিদেশি মুদ্রার সরবরাহে টান, টাকার দরপতন, মূল্যস্ফীতি আর চলতি হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধির মত পরিস্থিতিতে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআর