শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মূল্যস্ফীতি আরও কমেছে নভেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

মূল্যস্ফীতি আরও কমেছে নভেম্বরে

পরপর ২ মাস ৯ শতাংশের ওপরে থাকার পর অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসে। নভেম্বরে সেটি আরও কমেছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি এখন নিম্নমুখি।

সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত মাস শেষে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে। যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ৯ দশমিক ১০ ও আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে।


বিজ্ঞাপন


আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেন। মূল্যস্ফীতির তথ্য-উপাত্ত হিসাব করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস। সংস্থাটির হিসাবে, গত মাসে খাদ্যবহির্ভূত খাতে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। যা আগের মাসে অক্টোবরে ছিল খাদ্যবহির্ভূত খাতে  ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং খাদ্যে ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সার্বিক মূল্যস্ফীতি নভেম্বর মাসেও মাসেও কমেছে। এখন মূল্যস্ফীতি কমার প্রবণতায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। গত তিন মাসে ধারাবহিকভাবে মূল্যস্ফীতি হেট্রিক হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের দেশে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। আমাদের ধান ও সবজি উৎপাদন ভালো হয়েছে। সরকার জ্বালানি কেনে এবং বিক্রি করে। সামাজিক ও বাস্তব কারণে দাম বাড়াতে হয়।


বিজ্ঞাপন


মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৪২২টি পণ্যের উপর মূল্যস্ফীতি যাচাই করা হয়। এখন সেগুলো আবার ফের বিবেচনা করা হবে। কেননা এখানে সোনার দামও ধরা হয়েছে। সোনার দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ে। এছাড়াও মাখন ও কফিসহ এ রকম অনেক পণ্যের দাম ও ধরা হয়। এগুলো সংশোধন করা হবে।

বিবিএস এর তথ্যে আরও জানা গেছে, নভেম্বর মাসে গ্রামীণ পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে শতকরা ৮ দশমিক ৯৪ ভাগ যা অক্টোবরে ছিল শতকরা ৮ দশমিক ৯২ ভাগ। গ্রমীণ সূচকে আরও দেখা গেছে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ৩১শতাংশ যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

নভেম্বর মাসে শহর পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে শতকরা ৮ দশমিক ৭০ ভাগ যা অক্টোবরে ছিল শতকরা ৮ দশমিক ৯০ ভাগ। শহর পর্যায়ে আরও দেখা গেছে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৭দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে খাদ্যপণ্য যেমন ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পাম তেল সবজি (লাউ, কাঁচা কলা, কাঁচা পেপে, বেগুন, সিম বরবটি, টমেটো ও মূলা ইত্যাদি) মসলা (পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ), ফল পেয়ারা, পাঁকা পেপে ইত্যাদির মূল্য অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বর মাসে কমেছে বলে মূল্যস্ফীতি হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে। একই সাথে খাদ্যপণ্যের মধ্যে আটা, ময়দা, সুজি ও চিনি, ভোজ্য তেল সয়াবিন, মসলা (হলুদ ও মরিচ), ফলের মধ্যে আঙ্গুর আপেল কমলা এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্য যেমন পোশাকাদি ও স্বর্ণ ইত্যাদির মূল্য গত অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বর মাসে বেড়েছে। এছাড়াও সেমাই, নুডুলস খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মধ্যে শিক্ষা সংক্রান্ত আইটেম এর মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।

নভেম্বরে মজুরি হার শতকরা বেড়ে দাড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। কৃষিখাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। শিল্পখাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ০৬ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রী মূল্যস্ফীতি প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আশা পূরণ হয়নি। মূল্যস্ফীতি কমার মূল কারণ হচ্ছে ব্যবস্থাপনা। এক্ষেত্রে কোনো কোনো পণ্যের কর ছাড় এবং টিসিবিরি পণ্যে বিক্রির কারণে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

মধ্যবিত্তের দিকে আলাদা কোনো টার্গেট নেই সরকারের উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, অর্থনৈতিক, মানবিক ও রাজনৈতিক কারণে নিম্নবিত্তের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

ডব্লিউএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর