মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

এলসি বন্ধের খবর নাকচ বাংলাদেশ ব্যাংকের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

এলসি বন্ধের খবর নাকচ বাংলাদেশ ব্যাংকের
ফাইল ছবি

ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকে এলসি খোলা যাচ্ছে না বলে গণমাধ্যমের খবরকে নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘কমার্শিয়াল এলসি ওপেন বা খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। স্ব স্ব ব্যাংক তাদের রেমিটেন্স আয় ও রেমিটেন্স ব্যয় সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল বিবেচনায় তারা ঋণপত্র খুলছে, খুলে যাবে।’

সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, বৈশ্বিক মন্দায় ডলার সংকটে চাহিদামতো এলসি খুলতে না পেরে বিপাকে পড়ছেন আমদানিকারকরা। ছোট কিছু ব্যাংক এখন কোনো ধরনের এলসি খুলছে না। আগের এলসির দায় পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে কোনো কোনো ব্যাংক। সংকট দ্রুত না কাটলে শিল্পকারখানা অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর্থিক সংকটে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।

তাই এসব বিষয় নিয়ে দেশবাসীকে পরিষ্কার ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে অবশ্য রোববার বিজ্ঞপ্তি ব্যাংকের অর্থ না থাকা বা ব্যাংক বন্ধ নিয়ে যে তথ্য প্রচার হচ্ছে সে বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডলার সংকটের সমাধান নিয়েও কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ।

 


বিজ্ঞাপন


প্রত্যশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে অনেকটাই ভারসাম্য অবস্থা ফিরে আসবে।

লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, প্রধানত পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি- কমার্শিয়াল এলসি ওপেনিং বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সঠিক নয়। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে; দেখা যাচ্ছে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে এলসি ওপেন হয়েছে ১২৬৩ মিলিয়ন ডলার। গত মাসের এ সময়ে যা ছিল ১২৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ৪৭৪৩ মিলিয়ন ডলার এলসি ওপেন হয়েছে বলেও জানান তিনি।

bbb

অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানত করোনা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতির বহিঃখাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। এ কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালমাটাল। এরই প্রভাবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সরবরাহ চাহিদায় ব্যত্যয় ঘটতে থাকে।

এলসি খোলা প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল বিবেচনায় ব্যাংকগুলো ঋণপত্র খুলছে, খুলে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিপূর্ণ গাইডলাইন মোতাবেক তদারকি করে যাচ্ছে। বিশেষ তদারকিতে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে আজ অবধি বিদেশি মুদ্রায় কোনো লোন ডিফল্ট হয়নি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তা হতেও দেবে না। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক পরামর্শ ও সাপোর্ট দিয়ে যাবে।

এসময় তিনি বলেন, অগ্রাধিকার খাত এবং জরুরি পণ্যে (জ্বালানি, সার ও খাদ্য) আমদানিতে সরকারি ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রেখে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকারি ঋণপত্রে ডলার সাপোর্ট দিয়ে চলেছে এবং যাবে।

রেমিট্যান্স আসা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর ১০ পর্যন্ত রেমিটেন্স এসেছে ৬৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা গত বছরে এসেছিল ৬৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; এখানে প্রবৃদ্ধি ২.৮%। গত বছরের জুলাই থেকে সর্বশেষ নভেম্বর ১০ পর্যন্ত রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.১%। এছাড়া মোট রফতানি ২০২০-২১ এ ছিল ৪০৬৩৭ মিলিয়ন যা পূর্ববর্তী বছরে ছিল ৩৬০৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রফতানিও ক্রমবর্ধনশীল।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর