শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

চিনির দাম কমানোর আশ্বাস, অবৈধ মজুদের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

চিনির দাম কমানোর আশ্বাস, অবৈধ মজুদের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা
ফাইল ছবি

পাইকারি পর্যায়ে চিনি মজুদকারীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার মহাপরিচালক এ এইচ সফিকুজ্জামান বলেছেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে চিনির দাম কেজিতে ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে। এতদিন গ্যাসের সাপ্লাই ঠিক না থাকায় চিনির উৎপাদন কমে গেছে। চিনির ফ্যাক্টরিতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় চিনির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন


অবশ্য ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে চাহিদামতো চিনি পাচ্ছে না। যে কারণে চিনির সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি পাইকারি ব্যবসায়ীদের।

তবে সরবরাহ কম হলেও দাম বাড়ার কথা না এমনটা জানিয়ে ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক বলেন, ‘সংকটের অজুহাতে দাম বাড়ানো যাবে না। কেন দাম বাড়ানো হলো তা নিয়ে আজ থেকে কঠোর অবস্থা থাকবে আমাদের টিম। চিনির সংকটও থাকবে না। যার যত চিনি লাগবে সরবরাহ করা হবে।’

চিনির আসল পরিস্থিতি দেখতে মিলগুলোতেও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তার কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন: চিনির হঠাৎ রেকর্ড দাম, অ্যাকশনে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার


বিজ্ঞাপন


চিনির উৎপাদন কম হওয়ার কথা জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, দেশে গ্যাস সংকটের প্রভাব পড়েছে চিনির রিফাইনারিগুলোতে। পাঁচটি রিফাইনারির উৎপাদন ২০-২৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ থেকে সব রিফাইনারিতে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা হবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে বাজারে আগের মতোই চিনির সরবরাহ থাকবে।’

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চিনি পাচ্ছেন না

বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বড় বড় কোম্পানির কাছে অর্ডার দিলেও তারা সময়মতো চিনি পাচ্ছেন না।

কারওয়ান বাজারের জাফর ইকবাল নামের একজন চিনির ডিলার বলেন, গত ১৯ তারিখে ২০০ বস্তারও বেশি ফ্রেশের চিনি কিনেছিলাম। মাত্র দেড় ঘণ্টায় সব বিক্রি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে মেঘনা গ্রুপের কাছে অর্ডার করেও এখনো চিনি পাইনি। আমরা কোম্পানি থেকে চিনি পাচ্ছি না। চিনির ব্যবস্থা করে দেন, আমরাও বাজারে সরবরাহ করবো।

sugar2

এই বক্তব্যের জবাবে ভোক্তার ডিজি তাদের কাছে অভিযোগ না দেওয়ার কারণ জানতে চান। ব্যবসায়ীদের তিনি বলেন, আপনারা আজ আমাকে বলুন কোন কোন কোম্পানি আপনাদের চিনি সরবরাহ করছে না। আমি নিজ উদ্যোগে আজ থেকে ৫-১০ বস্তা করে সরবরাহ করবো। আজ থেকেই আপনাদের দেওয়া হবে, তবুও কেউ বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন না।

আরেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, ডিলারের কাছ থেকে চিনি কিনলেও রশিদ দেওয়া হয় না। যে কারণে ঝামেলা এড়াতে তিনি চিনি বিক্রি বন্ধ করেছেন।

এমন সমস্যার জবাব দিতে গিয়ে ভোক্তার ডিজি বলেন, চিনি কিনবো অথচ আমাকে রশিদ দেবে না, এটা কি মানা যায়? এটা হতে পারে না। রশিদ অবশ্যই দিতে হবে।

অভিযানের সময় মালের ক্রয় রশিদ না পেলে ওই ব্যবসায়ী অনিয়মে জড়িত এমনটা ধরে নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে দেন এই কর্মকর্তা।

গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারের একাধিক প্রতিষ্ঠান বাজার মনিটরিং করছে এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, সবার মতামত নিয়ে চিনির দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। কিন্তু বাজারে সংকট দেখা যাচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা বাজারে আছে, বাজার মনিটরিং ও মিলে মনিটরিং করা হচ্ছে। আজ থেকে আমাদের অভিযান আরও কঠোর থেকে কঠোর হবে।

সফিকুজ্জামান আরও বলেন, আমাদের চাহিদা ১৮ লাখ টন। সেখানে সব আমদানিনির্ভর। দেশি কারখানায় মাত্র ২৪ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে যেটা খুবই নগণ্য। এলসি মাধ্যমের ম্যাটারিয়াল আছে, এটা রিফাইন করা যাচ্ছে না। আমরা সেখানে উৎপাদনটা ঠিক রাখতে পারলে সমস্যা থাকবে না। আজ থেকে গ্যাসের সংকট থাকবে না।

এসময় অধিদফতরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বেশি দামে চিনি বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, সকালে বৈঠক করেছি, অভিযান জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। ক্রয়ের রশিদ থাকতে হবে কত দামে কিনছেন আর কত দামে বিক্রি করছেন। পাকা রশিদ যদি রাখেন তাহলে দাম কে বাড়ালো সেটা বোঝা যাবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মিলগুলোতেও অভিযানে যাবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর