বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ডিমের বাজারে অস্থিরতার জন্য দায়ী করপোরেট কোম্পানিগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২২, ০৮:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ডিমের বাজারে অস্থিরতার জন্য দায়ী করপোরেট কোম্পানিগুলো
ফাইল ছবি

ডিমের বাজার অস্থিতিশীলতার জন্য করপোরেট কোম্পানিগুলোকে দায়ী করা হয়েছে ঢাকায় আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায়।

শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (কেআইবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন মতামত দেন আলোচকরা।


বিজ্ঞাপন


ডিমের বর্তমান বাজারমূল্যে উদ্বেগ প্রকাশ এবং ডিম উৎপাদনে প্রয়োজনীয় খাদ্যের কাঁচামালের ঊর্ধ্বগতি, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার অপ্রাপ্যতা নিয়ে এই গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে ডিমের বাজারে অস্থির অবস্থা কাটিয়ে উঠতে এবং ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের মূল্য সহনীয় রাখতে পোল্ট্রি খাদ্যে ভর্তুকি প্রয়োজন। বক্তারা আরও উপলব্ধি করেন যে একটি পোল্ট্রি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে এই শিল্পকে সুসংহত করা সম্ভব। ডিম ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ ডিম বিপণন কেন্দ্রে অকশন হাউজে স্থাপন করে ন্যায্যমূল্যে ডিম বিপণন করা প্রয়োজন। সেজন্য এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

egg-1আলোচকরা আরও বলেন, যখনই চাল-ডিমের মতো খাদ্যর দাম বাড়ে, আমরা সিন্ডিকেটের কথা বলে থাকি। কারণ এটা বলা সহজ। বাস্তবতা সিন্ডিকেট নয়, কয়েকজন লোক একসঙ্গে হয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন না। বরং ছোট খামারিরা ৮০ ভাগ ডিম উৎপাদন করে থাকেন। অন্যদিকে ২০ শতাংশ বড় খামারিই বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে। দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারা যায় না। এমন স্বল্প সংখ্যক বড় খামারিদের নিয়মের মধ্যে আনতে না পারলে সিন্ডিকেট খুঁজলে হবে না।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, আগস্ট ৫ তারিখে ডিজেলের দাম বাড়ার পর থেকে পরিবহন ভাড়া বাড়ে। ডিমের বাজারে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। ১৩ তারিখে ডিমের বাজারে বড় অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। বড় বড় করপোরেট গ্রুপগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকায় তারা সব নিয়ন্ত্রণ করছে। বাস্তবতা হলো কর্পোরেট গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট আরও বাড়বে। কারণ প্রায় পুরো প্রক্রিয়াই তাদের নিয়ন্ত্রণে।


বিজ্ঞাপন


অভিযানের কারণে ডিমের দাম কমেছে দাবি করে সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হবে। যে কারণে ডিমের দাম কমে। পোল্ট্রি খাবারের ক্ষেত্রেও একই কথা। বাজার নিয়ন্ত্রণ কয়েকটি গ্রুপের হাতে। তারা নিজের ফার্মে প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়ার পর বাড়তি দামে খাবার ছোট খামারিদের কাছে বিক্রি করছে। ফলে ছোট খামারিরা চাইলেও কম দামে ডিম বিক্রি করতে পারে না।

বর্তমানে ডিমের বাজারে বাড়তি থাকা প্রসঙ্গে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, যারা ডিমের উৎপাদন এবং খাবার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত, তারা যথার্থ কাজ করছেন না বলেই দাম বেড়েছে। ভোক্তা অধিকার একার পক্ষে এ কাজ করতে পারবে না।

edd-2বিশ্ব ডিম দিবস এবং বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পের ওপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বাংলাদেশ এনিমেল এগ্রিকালচার সোসাইটির সভাপতি কৃষিবিদ মো. মোরশেদ আলম বলেন, একটি ডিমের বর্তমান উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৪৪ পয়সা। এর জন্য একমাত্র সমাধান খাবারের দাম কমানো। বর্তমানে ১ কেজি খাবারের দাম ৫৪ টাকা। 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লাইভস্টক এক্সপার্ট, এফএওর জুলিয়াস গিথিঞ্জি মুচেমি, দৈনিক প্রথম আলো যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন, গ্লোবাল টেলিভিশন সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দীপ্ত টিভির বার্তা বিভাগের প্রধান এস এম আকাশ, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট, ড. নাজনীন আহমেদ, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রাক্তন মহাপরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন, এডভান্সড পোল্ট্রি এন্ড ফিস ফিড লিমিটেড ব্যাবস্থাপনা পরিচালক নাছির উদ্দিন, ভ্যালু চেইন বিশেষজ্ঞ ড. আনিসুর রহমান, ল্যাব এইড গুলশান লিমিটেডের পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম এনিসহ অনেকে।

ডিএইচডি/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর