শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জুলাইয়ে রেকর্ড রেমিট্যান্স: রিজার্ভে স্বস্তির আভাস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ আগস্ট ২০২২, ১১:৩৮ এএম

শেয়ার করুন:

জুলাইয়ে রেকর্ড রেমিট্যান্স: রিজার্ভে স্বস্তির আভাস

ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে নানা পদক্ষেপের সুফল আসতে শুরু করেছে। অন্যদিকে জুলাই মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ১৫ শতাংশ। আবার ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে জুলাইয়ে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সবশেষ কর্মদিবস মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে রিজার্ভ নিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তির আভাস মিলছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই তিন সূচকের সুখবরেই রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। তবে এর পেছনে রেমিট্যান্স বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে।


বিজ্ঞাপন


আর বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রবাসীরা এখন ডলারের রেট বেশি পাচ্ছেন। এছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এ কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে। আশা করছি এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

গত ১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে অব্যাহতভাবে ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভ আরও কমে যায়।

ক্রমেই কমতে কমতে ২৬ জুলাই নেমে আসে ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। একদিন পর তা আরও কমে ৩৯ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। যদি এখন ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে রিজার্ভে।


বিজ্ঞাপন


গত এপ্রিল থেকে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিচ্ছিল সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। যার কিছুটা হলেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে এখন।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার (এলসি) হার কমেছে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ। জুলাই মাসে ৫৪৭ কোটি (৫.৪৭ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এলসি খোলা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি (৭.৯৬ বিলিয়ন) ডলারের।

অন্যদিকে এই মাসে বিদেশি মুদ্রার অন্যতম প্রধান উৎস রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে তথ্য জানা গেছে, বিশ্ববাজারে জুলাই মাসে দেশের পণ্য রফতানি হয়েছে ৩ হাজার ৯৮৪ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ে তুলনায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্যমতে, জুলাই মাসে ২০৯ কো‌টি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়ে‌ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ডলারের বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এই অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

অন্যদিকে ইপিবির তথ্যমতে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকারের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৯২০ মিলিয়ন ডলার। সেখানে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৮৪ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার।

ইপিবির তথ্য বলছে, বাংলাদেশে জুলাই মাসে প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাকে ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, প্লাস্টিক পণ্যে ৪৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচার্ড কমোডিটিজে ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, চামড়াজাত পণ্যে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, তৈরি পোশাকে ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং পাটজাত পণ্যে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

জুলাইয়ে নিট ও ওভেন মিলিয়ে ৩৩৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। যদিও কৃষি, হস্তশিল্প ও কেমিক্যাল পণ্য রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয়ের লক্ষ্য ধরেছে সরকার।

বিইউ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর