শিল্প কাঁচামাল আমদানিতে ইউস্যান্স বাকিতে পণ্য আমদানি সুবিধার মেয়াদ পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি লেনদেন সহজ করতে শিল্প কাঁচামালসহ নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এখন থেকে সর্বোচ্চ ২৭০ দিন অথবা ক্যাশ কনভার্সন সাইকেল, যেটি আগে শেষ হবে সে পর্যন্ত ইউস্যান্স সুবিধায় আমদানি করা যাবে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনায় এ তথ্য জানিয়ে সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর আগে এফই সার্কুলার নং ৮ (২০ জানুয়ারি ২০২৫) এবং এফই সার্কুলার লেটার নং ২৭ (১৮ আগস্ট ২০২৫) অনুযায়ী শিল্প কাঁচামাল, ব্যাক-টু-ব্যাক আমদানি, কৃষিযন্ত্র ও রাসায়নিক সার আমদানিতে সরবরাহকারী বা ক্রেতা ঋণের আওতায় ইউস্যান্স মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করা হয়েছিল, যার মেয়াদ ছিল ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই সুবিধা পুরোপুরি প্রত্যাহার না করে বাস্তবসম্মত সময়সীমার মধ্যে সীমিত করা হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যবসার প্রকৃত নগদ প্রবাহ পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই এই পুনর্নির্ধারণ।
ইউস্যান্স হলো এমন একটি আমদানি পরিশোধ ব্যবস্থা, যেখানে পণ্য আমদানির পর নির্দিষ্ট সময় পার হলে মূল্য পরিশোধ করা হয়। অর্থাৎ, পণ্য আগে আসে, টাকা পরে দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থায় আমদানিকারক তাৎক্ষণিক নগদ চাপ ছাড়াই কাঁচামাল ব্যবহার করে উৎপাদন ও বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পান। ব্যাংকিং ভাষায় একে ইউস্যান্স এলসি বলা হয়। এর বিপরীতে রয়েছে সাইট এলসি, যেখানে পণ্যের কাগজপত্র ঠিক থাকলেই সঙ্গে সঙ্গে মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় বলেছে, ইউস্যান্স সুবিধা দেওয়ার আগে এডি ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, আমদানিকারকের ক্যাশ কনভার্সন সাইকেল বাস্তবসম্মত। অর্থাৎ, কাঁচামাল কেনা থেকে শুরু করে পণ্য বিক্রি করে নগদ অর্থ হাতে আসতে যে সময় লাগে, তার সঙ্গে ইউস্যান্স মেয়াদের যৌক্তিক মিল থাকতে হবে।
ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র ক্ষেত্রে ইউস্যান্স মেয়াদ নির্ধারণ করতে হবে আইন অনুযায়ী রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনার নির্ধারিত সময়সীমা অনুসরণ করে। তবে আগের মতোই, এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ)-এর আওতায় অর্থায়িত আমদানির ক্ষেত্রে এই বাড়তি ইউস্যান্স সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতিবিদদের মতে, নতুন এই সিদ্ধান্ত একদিকে আমদানি ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনবে, অন্যদিকে ব্যাংক খাতের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হবে। তবে শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য কার্যকর নগদ প্রবাহ ব্যবস্থাপনা এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
টিএই/এআর

