পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিগ ওয়েভ)-এ আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। এদিন সকাল ১০টায় মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে দেশি-বিদেশি ৩২৪টি স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
বাণিজ্য সচিব বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলায় অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল, প্যাভিলিয়ন ও রেস্টুরেন্ট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে ই-টিকেটিং সুবিধা—অনলাইনে টিকিট কেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে সরাসরি মেলায় প্রবেশ করা যাবে।
তিনি বলেন, ডেডিকেটেড শাটল বাস সার্ভিসের পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে যুক্ত হয়েছে ‘পাঠাও’ পরিবহন সেবা।
৩২৪টি স্টল-প্যাভিলিয়ন, দুইটি মেগা হল। মেলার লে-আউট অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৩২৪টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্টুরেন্ট দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক, সাধারণ ব্যবসায়ী এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শতভাগ স্বচ্ছতায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, মেলায় পলিথিন ব্যাগ ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা হবে।
আয়োজকরা জানায়, এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৫৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের হল-এ ও হল-বি তে রয়েছে ১৭৪টি স্টল। হলের সম্মুখ ও পেছনের উন্মুক্ত এলাকাসহ উত্তর পাশের ৬ একর জমিতে স্থাপন করা হয়েছে প্যাভিলিয়ন, ফুড জোন, কফি শপ ও মিনি রেস্টুরেন্ট।
বিজ্ঞাপন
এবারের আয়োজনে রপ্তানি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরতে গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ ‘Export Enclave’। এছাড়া ৫২’র ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশ স্কয়ার, যেখানে থাকছে স্থিরচিত্র প্রদর্শনী।
মেলায় বস্ত্র, ইলেকট্রনিক্স, ফার্নিচার, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও জুতা, কসমেটিক্স, গৃহসামগ্রী, খেলনা, স্টেশনারি, হস্তশিল্প, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হোম ডেকরসহ নানা ধরনের দেশীয় পণ্য প্রদর্শিত হবে।
এবারের মেলায় ভারত, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া—এই ৬ দেশের ১১টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশ, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। প্রবেশপথে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
ফায়ার ব্রিগেড, ফ্রি প্রাথমিক চিকিৎসা, ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট এবং দুই শতাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে ৫০০ গাড়ির পার্কিং সুবিধাসংবলিত দ্বিতল পার্কিং ভবনসহ একাধিক খোলা পার্কিং এলাকা।
মা ও শিশু কেন্দ্র, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্ণার, শিশু পার্ক, মসজিদ, এটিএম বুথ, ক্যাফেটেরিয়া এবং তথ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মেলার টিকিট মূল্য প্রাপ্তবয়স্ক ৫০ টাকা, ১২ বছরের নিচে শিশু ২৫ টাকা। মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও জুলাই আন্দোলনে আহতরা কার্ড প্রদর্শনপূর্বক বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত: (সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত) চলবে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, বিপণন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন— ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান এবং ইপিবির মহাপরিচালক বেবি রাণী কর্মকার।
এমআর/এএস

