মুনাফাসহ শতভাগ আমানত ফেরতের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন একীভূত হওয়া শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীরা। দীর্ঘদিন ধরে আমানতের অর্থ উত্তোলন করতে না পারায় চরম সংকটে পড়েছেন এসব ব্যাংকের ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও গভর্নরের পক্ষ থেকে বারবার সময় বেধে দেওয়া হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে গ্রাহকরা প্রশ্ন তোলেন, গভর্নর ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত সেই ‘আগামী সপ্তাহের শেষ’ কোথায়?
একই সঙ্গে দ্রুত আমানত ফেরতসহ চার দফা দাবি জানান তারা। দাবি মানা না হলে আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন ভুক্তভোগী আমানতকারীরা।
গ্রাহকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২ লাখ টাকা আমানত সুরক্ষার বাইরে থাকা অর্থ ফেরতের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত গেজেট প্রকাশ, নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে অবিলম্বে ২ লাখ টাকা আমানত সুরক্ষার অর্থ পরিশোধ, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের সব হিসাবের আমানতকারীদের মুদারাবাসহ শতভাগ আমানত ফেরতের নিশ্চয়তা এবং দ্রুত সকল ব্যাংকিং লেনদেন স্বাভাবিক করা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গ্রাহকরা জানান, সংশ্লিষ্ট পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীরা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ তুলতে পারছেন না। প্রায় পাঁচ মাস আগে এসব ব্যাংক একীভূতকরণের ঘোষণা দেওয়া হলেও আমানত ফেরতের বিষয়ে কার্যকর কোনো অগ্রগতি এখনো দৃশ্যমান হয়নি।
বিজ্ঞাপন
তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর একাধিকবার গণমাধ্যমে আমানত ফেরতের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত দুই মাসে বিভিন্ন সময়ে ‘চলতি মাসে’, ‘আগামী সপ্তাহে’ কিংবা ‘খুব শিগগিরই’ টাকা পাওয়া যাবে—এমন বক্তব্য প্রচারিত হলেও ব্যাংক শাখায় গেলে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলছে না।
এক্সিম ব্যাংকের সাভার শাখার একজন ভুক্তভোগী আমানতকারী বলেন, ‘আগামী সপ্তাহের শেষ কোথায়? আমাদের টাকা ফিরিয়ে দেন। মুখের কথা আর বিশ্বাস করি না। টাকা কবে দেওয়া হবে, তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।’
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এক ভুক্তভোগী গ্রাহক বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে দেশের বাইরে থাকি। জীবনের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছি। এখন সেই টাকা পেতে নানা অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। আমি এসব বুঝি না, আমার টাকা এখনই দরকার।’
আরেক আমানতকারী বলেন, ‘দিনের পর দিন আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। আমার বাবা অসুস্থ, টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। ব্যাংকে টাকা রেখে কি আমরা কোনো অপরাধ করেছি?’
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, দ্রুত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মুনাফাসহ শতভাগ আমানত ফেরত না পেলে তারা আন্দোলন আরও জোরদার করবেন।
টিএই/এএইচ

