মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামের মৃত্যুতে বিআইআইটির শোক

ঢাকা মেইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামের মৃত্যুতে বিআইআইটির শোক

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থটের (বিআইআইটি) প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল, খ্যাতিমান চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও গবেষক মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম আর নেই। ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার উত্তরায় ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিআইআইটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ। তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোক–সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম ছিলেন দেশের ইসলামিক অর্থনীতি, ব্যাংকিং, উন্নয়ননীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি গবেষণার একজন পথিকৃৎ। ইসলামিক অর্থনীতি ও চিন্তাচর্চায় তাঁর অনন্য অবদান রয়েছে। দেশে ইসলামিক অর্থনীতি গবেষণা বিস্তারে তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত। লেখালেখি ও গবেষণায় তার জীবন ছিল সমৃদ্ধ। মুসলিম সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাঁর দূরদৃষ্টি ও নিষ্ঠা ও শ্রেষ্ঠত্ব ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও স্থায়ী অনুপ্রেরণার অসাধারণ উৎস হয়ে থাকবে, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। চিন্তা ও জ্ঞান সংস্কারে নিবেদিত একটি থিংক ট্যাঙ্ক বিআইআইটি এর অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ও সহ–প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিআইআইটি–এর গবেষণা, পাঠ্যক্রম উন্নয়ন, ইসলামায়ন অব নলেজ আন্দোলন এবং সভ্যতার আন্তঃসংলাপ প্রতিষ্ঠায় অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।


বিজ্ঞাপন


মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন ছিল অসাধারণ সব সাফল্যে ভরপুর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন শীর্ষ সরকারি প্রতিষ্ঠানে ফাইনান্স ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন এবং আইসিএবি–এর অধীনে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ ইসলামিক ইকোনমিকস রিসার্চ ব্যুরো প্রতিষ্ঠা (১৯৭৬), দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ইসলামিক ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (১৯৮৩) প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক এবং ঢাকা ইলেক্ট্রেসিটি সাপ্লাই সেন্টার (ডেসা), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজউকের ফিন্যান্স ডিরেক্টরসহ অনেকগুলো জাতীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম অর্থনীতি, ব্যাকিং, ফাইন্যান্স, সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক ১৩টিরও বেশি বই ও বহু প্রবন্ধ রচনা করেছেন। বিশ্বখ্যাত এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলামিক ইকোনোমিক্স–এ তাঁর ‘ইনফ্রাস্ট্রাক্চার ডেভেলপমেন্ট  অফ মুসলিম কান্ট্রিজ’ শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে গবেষণা, সেমিনার ও আন্তর্জাতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আমন্ত্রণে ইন্টারন্যাশনালন ভিজিটরস প্রোগ্রাম-এ অংশগ্রহণ করেন। সামাজিক সংগঠক ও শান্তি–উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এশিয়ান মুসলিম অ্যাকশন নেটওয়ার্ক  (আমান)–এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ইসলামিক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে দেশময় ছড়িয়ে দিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শিক্ষা, গবেষণা ও মানুষের জীবনমানের অগ্রগতিতে তিনি সর্বদা ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তিনি কোনো দল বা গোষ্ঠীর ছিলেন না, ছিলেন পুরো জাতির ও উম্মাহর সম্পদ।

তিনি কানাডায় স্থায়ী হওয়ার পরও কমিউনিটি সেবায় যুক্ত ছিলেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ অন্টারিও ভলেন্টেয়ার সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০১৩ লাভ করেন। তিনি আশফাক-আজিজ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তার স্থাবর-অস্থাবর অনেক সম্পত্তি আখেরাতের কল্যাণে দান করে গেছেন। তিনি সিরাজগঞ্জে নিজ এলাকায় আশফাক আজিজ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জোবায়দা মসজিদ, আশফাক অজিজ রিসার্চ সেন্টার, আশফাক আজিজ ইসলামিক একাডেমী, আশফাক আজিজ এতিমখানা ও শিক্ষা কেন্দ্র, মফিজ উদ্দীন সরকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। -বিজ্ঞপ্তি  

ক.ম/ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর