দেশে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রেশন (এনইআইআর) সিস্টেম চালু হলে মোবাইল ফোনের দাম বাড়বে না-বরং কমবে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন মোবাইলফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) নেতারা।
তাদের দাবি, এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে গ্রে মার্কেট নিয়ন্ত্রণে আসবে, স্থানীয় উৎপাদন বাড়বে এবং বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তারা আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা না বুঝে যারা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আন্দোলন করছেন তারা ভুল পথে আছেন। আমরা তাদের সঠিক পথে আসার অনুরোধ করবো।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংগঠনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি কোষাধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, এনইআইআর নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে-এসব যাচাই করা প্রয়োজন। তিনি জানান, যারা এখন প্রতিবাদ-আন্দোলন করছেন, তারা ভুল পথে আছেন। সঠিক পথে এলে আমরা সবাই মিলে ব্যবসা করতে পারবো। গ্রে আমদানি বন্ধ হলে অফিসিয়াল পিআই মূল্যের চেয়েও কম দামে প্রিমিয়াম মডেল পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরও জানান, দেশে প্রায় ১২ হাজার মোবাইল দোকান রয়েছে, যেখানে মোট বিক্রয়ের ৯০ শতাংশই বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে হয়। আন্দোলনে বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্ক ছাড়া সারা দেশের দোকান খোলা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এমআইওবি সভাপতি জাকরিয়া শহীদ বলেন, ‘এনইআইআর না থাকার কারণে গ্রে মার্কেট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ফলে আমরা দেশে হাই-এন্ড ফোন উৎপাদন করতে পারছি না। তিনি দাবি করেন- এনইআইআর সিস্টেম চালু হলে স্থানীয় কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মতো মানসম্পন্ন ফোন উৎপাদন করতে পারবে এবং দামও হবে প্রতিযোগিতামূলক।’
তার ভাষায়, ‘এনইআইআর চালু হলে ফোনের দাম বাড়বে-এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। একটা ন্যারেটিভ দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী ভাইয়েরা এনইআইআর বাস্তবায়ন হলেও শুল্ক ছাড়া দুটি ফোন আনতে পারবেন।’
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘নিরাপত্তাহীন ডিভাইস ব্যবহারে ব্যক্তিগত তথ্য ও সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে, যা জাতীয় আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি।’
মোবাইল ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল কাপুরিয়া বলেন, ‘এসআর থেকে সেলসম্যান পর্যন্ত দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ বৈধ ফোনের ব্যবসায় যুক্ত। অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।’
শাওমি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়া উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যারা কর ফাঁকি বা সিন্ডিকেটের অভিযোগ করছেন-বাস্তবতা ঠিক উল্টো।’
তিনি দাবি করেন, শাওমি সাত-আটটি দেশে যেভাবে ফোন তৈরি করে, বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তার মতে, বর্তমান অস্থিতিশীলতা এ সম্ভাবনাময় শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন, স্যামসাং মোবাইল উৎপাদক প্রতিষ্ঠান এক্সেল টেলিকমের সেলস হেড মো. সাইফুদ্দিন টিপুসহ মোবাইল ফোন ডিস্ট্রিবিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
বিইউ/এমআই

