রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দামের পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে সাধারণ ভোক্তাদের নিত্যদিনের খাদ্য ব্যয়ে বাড়তি চাপ পড়ছে। তবে সাময়িক স্বস্তি হিসেবে বাজারে মাছের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি, বেশিরভাগ প্রজাতির মাছের দাম রয়েছে স্থিতিশীল।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে মাছ, মাংস ও ডিমের দামের এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহ থেকে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেশি।। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকায় পাওয়া গেছে। তার আগের সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। ধারাবাহিকভাবে ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ক্রেতারা বলেন, হঠাৎ মুরগির দাম কমে যাওয়ায় স্বস্তি দিলেও এখন আবার ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া শঙ্কা তৈরি করেছে।
রিকশাচালক সাইদুল ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা তো আর বড় মাছ, মাংস খেতে পারি না। ফার্মের মুরগীর ওপর ভরসা ছিল। দাম কমায় ভালো লাগলো। এখন আবার শুনলাম বেড়ে গেছে। তাহলে তো মুর খাওয়াও বাদ দিতে হবে।
এছাড়া সোনালি মুরগির দামও ৩০০-৩১০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। দেশী মুরগীর দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ডিমের দামেও স্বস্তি নেই। অল্প অল্প করে কয়ক সপ্তাহে বেড়েছে গরিবের 'পুষ্টি' ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ছিল। তার আগের সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, খামারি পর্যায়ে খাবার, ওষুধ ও পরিবহন ব্যয় বাড়ায় বাজারে দাম বেড়েছে।
অপর ব্যবসায়ী জানান, উৎপাদন কমে যাওয়া ও গরমের প্রভাবেই ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমেছে, ফলে দাম বেড়েছে।
অন্যদিকে, রুই, কাতলা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া প্রভৃতি মাছের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, রুই ও কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে ইলিশের দাম চড়া। মাছ বিক্রেতা রহিম ঢালী বলেন, ‘১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি করছি ২২০০ টাকায়। এছাড়া ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৬০০-১৮০০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০-১৫০০ টাকা, আর দেড় কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ টাকা।’
আর চাষের রুই কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩৫, কৈ ২৮০-৩০০ এবং পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় মাছের বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আসেনি।
ভোক্তারা বলছেন, মাছের দাম স্থিতি থাকলেও ডিম ও মুরগির বাজারে হঠাৎ করে এভাবে দাম বাড়া খুবই অস্বস্তিকর। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের এমন দামের ওঠানামায় তাদের মাসিক ব্যয় পরিকল্পনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে স্বচ্ছতা এবং সরবরাহ চেইনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে ভোক্তারা এমন অস্থিরতার মুখে পড়তেই থাকবে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনই সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এমআর/ইএ

