বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

৮টায় দোকান বন্ধের নির্দেশ প্রথম দিন কতটা বাস্তবায়ন হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২২, ১০:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

৮টায় দোকান বন্ধের নির্দেশ প্রথম দিন কতটা বাস্তবায়ন হলো
অল্প কয়েকটি মার্কেট নিয়ম মানলেও বেশির ভাগ দোকানপাট খোলা ছিল। ছবি: ঢাকা মেইল

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার সারাদেশে রাত ৮টার পর দোকান, বিপণি বিতান, মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, যা আজ সোমবার (২০ জুন) থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে প্রথম দিন রাজধানীতে সেই নির্দেশের বাস্তবায়নে ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। রাত ৮টার পরও অনেক দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে।

রাত আটটার পর সরেজমিনে রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, পান্থপথ, মালিবাগ, মৌচাক, খিলগাঁও, মুগদা এলাকায় দেখা গেছে, ৯টার পরও বেশিরভাগ দোকান, বিপণি বিতান খোলা রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


দোকানদাররা বলছেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টারর মধ্যে তাদের বেচাকেনা ভালো চলে। এইসময় দোকান বন্ধ রাখলে তাদের অনেক লোকসানের মুখে পড়তে হবে। প্রশাসনের কড়াকড়ি না থাকায় অনেকেই ৮টার পরও দোকান বন্ধ করেননি।

দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়। 

রাজধানীর মুগদা এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হার্ডওয়ারের একজন দোকানদার বলেন, ‘সরকার ঘোষণা করছে, এখনও সবাই খোলা রাখছে। সবাই বন্ধ করলে আমিও বন্ধ করবো।’

আরেক কাপড় বিক্রেতা বলেন, ‘এই সময় আমাদের বেশি বেচাকেনা হয়। সামনে ঈদ, এখন দোকান বন্ধ রাখলে তো লস হয়ে যাবে।’


বিজ্ঞাপন


shop1

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকটি মার্কেট সরকারি নির্দেশ মেনে যথাসময়ে বন্ধ করলেও বেশির ভাগ মার্কেট ও দোকানপাট রাত ৮টার পরও বন্ধ ছিল। প্রথম দিন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো কড়াকড়ি লক্ষ্য করা যায়নি।

এর আগে আজ সোমবার থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণি বিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গতকাল রোববার (১৯ জুন) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর/দক্ষিণ, এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সানুগ্রহ নির্দেশনা দিয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালনপূর্বক সারাদেশে রাত আটটার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচা বাজার ইত্যাদি খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

shop2

তবে জরুরি প্রয়োজনে রাত ৮টা পরেও খোলা যাখা যাবে কিছু প্রতিষ্ঠান। যেসব প্রতিষ্ঠান হলো- ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস, প্রধানত তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান, ঔষধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান, তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার জন্য নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, খুচরা পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন, নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান, যেকোনো ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি, আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে। এছাড়াও ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।

টিএই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর