মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পরিস্থিতির মধ্যেও জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
উপদেষ্টা বলেন, যুদ্ধের মধ্যে একটি তেলের জাহাজ বন্দরে এসেছে, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত মজুদ হাতে রয়েছে। আমাদের সুবিধা হচ্ছে—সরবরাহকারীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে আসেন। সোর্স মধ্যপ্রাচ্য হলেও অনেক সরবরাহকারী রয়েছে, যারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মার্কেট থেকে সরবরাহ করে। সে কারণে তেলের সরবরাহ নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই। তবুও আমরা যুদ্ধের ওপর নজর রাখছি।
ফাওজুল কবির খান বলেন, জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহতের বিষয়টি নির্ভর করবে যুদ্ধ কতদিন চলে তার ওপর। স্বল্প মেয়াদে জ্বালানির ব্যবস্থা করা আছে। আপাতত বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম এখন বাড়বে না। বিপিসির মুনাফা থেকে সমন্বয় করা হবে।
ভর্তুকিও বাড়াবে না আবার দাম বাড়াবে না বলা হচ্ছে, তাহলে ঘাটতি সমন্বয় হবে কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কিছু কৌশল রয়েছে। বিপিসির কাছে কিছু অর্থ রয়েছে। প্রয়োজন হলে, সেখান থেকে সমন্বয় করা হবে।
এর আগে, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড এবং লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ পিএলসির মধ্যে একটি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইজারল্যান্ড ও স্পেনের রাষ্ট্রদূতগণ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে উভয় পক্ষকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। জ্বালানি খাতে ভর্তুকি অনেক বেশি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন, অন্যথায় কোনো চুক্তি অনুমোদিত হবে না।
উপদেষ্টা উপস্থিত তিন রাষ্ট্রদূতকে চুক্তির স্বাক্ষরের বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, এই চুক্তি বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে আগ্রহ সৃষ্টি করবে। এই চুক্তি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
লাফার্জহোলসিমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী সকলের প্রচেষ্টার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে এবং এই ধরনের আরও চুক্তি হলে তারা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
এটি শুধু গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে আরও নতুন সুযোগ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমআর/এমএইচটি

