সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ঢাকা

‘এনবিআর দুই ভাগ করার প্রক্রিয়া সঠিক নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘এনবিআর দুই ভাগ করার প্রক্রিয়া সঠিক নয়’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াগতভাবে সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, আলোচনা ছাড়াই এবং পেশাজীবীদের মতামত উপেক্ষা করে এই বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

সোমবার (১৯ মে) রাজধানীতে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. দেবপ্রিয়।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ‘এনবিআর ভাগের বিষয়টি আমাদের আগের সুপারিশে ছিল। কিন্তু যেভাবে এটি করা হয়েছে, সেটি ভুল। আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পেশাজীবীদের ভূমিকা সংকুচিত করা হয়েছে। অন্য অংশীজনদের প্রভাবশালী করে তোলা হয়েছে। এমন একটি প্রক্রিয়া মেনে নেওয়া যায় না।’

এটা এখন শুধরে নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাজেট ব্যয় নিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, সরকারের রাজস্ব ব্যয়ের সবচেয়ে বড় দুটি খাত হলো—সুদ পরিশোধ এবং ভর্তুকি। কিন্তু অর্থনীতি পরিচালনায় কোনো সুসংগঠিত নীতিমালা দেখা যাচ্ছে না। সব কিছু চলছে ‘এডহক’ ভিত্তিতে।

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির কোনো বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মূল্যস্ফীতি যদি ৮-৯ শতাংশে নামে, তাহলে অন্তত ইতিবাচক একটি সংকেত পাওয়া যাবে।


বিজ্ঞাপন


চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে মানুষ বাড়ছে বলেও সতর্ক করেন দেবপ্রিয়। বলেন, ‘যুবদের মধ্যে দারিদ্র্য আরও বাড়ছে। এটা এখন আর আলাদা করে বলার বিষয় না।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, সরকার কিছু সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে ঠিকই, তবে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্স থেকেও বলা হয়েছিল, দ্বি-বার্ষিক পরিকল্পনা দরকার। অথচ দেখা যাচ্ছে, পূর্ববর্তী সরকারের বাজেট কাঠামো ও নীতিই এখনো অনুসরণ করা হচ্ছে। পুরোনো পদ্ধতি সামান্য ঘষামাজা করে কাজ চালানো হচ্ছে। এটিই আমাদের উদ্বেগের জায়গা।’

তিনি আরও বলেন, টাস্কফোর্সের যেসব সুপারিশ ছিল, সেগুলোর বাস্তবায়নে যে গতি প্রত্যাশিত ছিল, সেটি দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, একদিকে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে, অন্যদিকে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য কাঠামোও সংকটে। এমন অনিশ্চয়তায় সরকার আগামী বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যা আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আওয়ামী লীগের সময় দেশে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলারা একসাথে ছিলেন। এখন রাজনীতিবিদরা পিছিয়ে গেছেন, ব্যবসায়ীরা নিষ্প্রভ, কিন্তু আমলারা আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন।

এই পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক ভারসাম্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এমআর/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর