আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এসএমই খাতের উন্নয়নে নীতিগত সহায়তা ও অন্তত ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার আহ্বান জানিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তাদের মতে, দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের ব্যাপক অবদান থাকলেও বাজেটে এ খাত বারবার উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। সহজ শর্তে ঋণ, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি সহায়তা ও বাজার সম্প্রসারণে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আসছে না।
মঙ্গলবার (১৩ মে) এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সহযোগিতায় আয়োজিত ‘এসএমই-বান্ধব বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৫-২৬’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশরাফুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মুশফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও পরিচালক শামিম আহমেদ। ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিজ্ঞাপন
সভায় জানানো হয়, দেশের প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ এসএমই উদ্যোক্তার তুলনায় বর্তমান বাজেট ও কাঠামো অনেকটাই সীমিত। এদের ৭০ শতাংশই ঢাকার বাইরে অবস্থান করলেও সেখানে ফাউন্ডেশনের কোনো আঞ্চলিক কার্যালয় নেই; যা সেবা বিস্তারের ক্ষেত্রে বড় বাধা। তাই এসএমই নীতিমালা ২০২৫ বাস্তবায়নে এবং দেশজুড়ে উদ্যোক্তাদের সহায়তায় পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়।
ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জানান, ২০০৭ সাল থেকে এসএমই ফাউন্ডেশন জাতীয় শিল্পনীতি বাস্তবায়নের পাশাপাশি উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্লাস্টারভিত্তিক কার্যক্রম, প্রযুক্তি হস্তান্তর, দক্ষতা উন্নয়ন, নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং সহজ শর্তে অর্থায়নের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ উদ্যোক্তা সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।
এছাড়া মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, চলতি বছর বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে পাওয়া ৩০০ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ১৪০টি প্রস্তাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জমা দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এনবিআরে মোট ৫৫৭টি প্রস্তাব জমা দিয়েছে ফাউন্ডেশন; যার মধ্যে ৮৫টি আংশিক বা পূর্ণাঙ্গভাবে গৃহীত হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, দেশের জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ৩২ শতাংশ, যা চীন (৬০%), শ্রীলঙ্কা (৫২%), পাকিস্তান (৪০%) ও ভারত (৩৭%)– এসব প্রতিবেশি দেশের তুলনায় অনেক কম।
বিজ্ঞাপন
এসএমই ফাউন্ডেশনের দাবি, আসন্ন বাজেটে ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলে এসএমই নীতিমালা- ২০২৫ বাস্তবায়ন এবং উদ্যোক্তাদের সহায়তার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
টিএই/এফএ

