সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গোষ্ঠী স্বার্থে কর অব্যাহতি রুখতে নীতিমালা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

গোষ্ঠী স্বার্থে কর অব্যাহতি রুখতে নীতিমালা প্রকাশ

কর অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নীতিমালা না থাকায় ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা রাজনৈতিক স্বার্থে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে তার অনুগত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্বিচারে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে হয়েছে সরকারকে। অবশেষে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সোমবার (১২ মে) এনবিআরের ওয়েবসাইটে ‘কর ব্যয় নীতিমালা এবং এর ব্যবস্থাপনা কাঠামো’ শীর্ষক ওই নীতিমালায়, কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে এনবিআরের সকল ক্ষমতা রহিত করে তা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। তবে সংসদ কার্যকর না থাকলে এ বিষয়ে বিধান জারি করবেন রাষ্ট্রপতি। বৃহত্তর জনস্বার্থে মন্ত্রী পরিষদ কিংবা উপদেষ্টা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে অর্থমন্ত্রী/ অর্থ উপদেষ্টা জরুরি প্রয়োজনে কর অব্যাহতি অনুমোদন করলেও তার সময়সীমা সংশ্লিষ্ট অর্থ বছরের শেষ দিনের বেশি হবে না। তারচেয়ে বেশি সময়ের জন্য সেটি কার্যকর করতে হলে সংসদের অনুমোদন নিতে হবে। এ ধরনের আরও বেশ কিছু শর্ত দিয়ে এনবিআর জারীকৃত এ নীতিমালা আগামি অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে অর্থাৎ আগামি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, বর্তমানে যেসব ক্ষেত্রে কর অব্যাহতির মেয়াদ উত্তীর্ণের কোনো তারিখ নেই অর্থাৎ অনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কর অব্যাহতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেগুলো আগামি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সংসদে উপস্থাপনের কথা বলা হয়েছে। সংসদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কর অব্যাহতির বিষয়ে অনুমোদন, পরিবর্তন, সংশোধন কিংবা রহিতকরণ করা যাবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

অপরদিকে নীতিমালা অনুযায়ী, কর অব্যাহতির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কিংবা অর্থ উপদেষ্টা ব্যতীত কোনো মন্ত্রী, সরকারের কোনো সংস্থা জাতীয় সংসদে অনুমতির লক্ষ্যে কর সংশ্লিষ্ট বিল বা অর্থবিলে অন্তর্ভুক্তির উদ্দেশে আইনানুগভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন না। কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ভূতাপেক্ষভাবে কার্যকারিতা দেওয়া যাবে না। তবে আন্তর্জাতিক কনভেনশন, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, কর সংশ্লিষ্ট কোনো চুক্তি, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় কর পরিহার সংক্রান্ত কোনো চুক্তির আওতায় অনুমোদিত কর ছাড়সমূহ এবং কর আইনসমূহ নীতিমালার ওপর প্রাধান্য পাবে।

কর অব্যাহতি প্রাপ্তির প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হতে হবে এবং এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ আবশ্যিকভাবে সরকারের সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও প্রযুক্তিগত বা অন্য কোনো নীতির উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে হতে হবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, যেসব ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হবে তার কর সুবিধা সমাপ্তির তারিখ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। তবে জাতীয় সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত রাখা যাবে। নীতিমালা কার্যকরের পর প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া যাবে।


বিজ্ঞাপন


কর অব্যাহতির নির্দিষ্ট মেয়াদকাল উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হবে। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াতে হলে কর সুবিধার কার্যকর ফলাফল এবং কর ব্যয়ের পরিমাণ পর্যালোচনার ভিত্তিতে সময়বৃদ্ধির আইনানুগ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
কর অব্যাহতি ব্যবস্থা বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি কেন্দ্রীয় তথ্য সংগ্রহ রক্ষণাগার স্থাপন করবে, কর অব্যাহতির সুবিধা যাতে অন্য কেউ লাভ করতে না পারে সেজন্য একটি বিশেষায়িত যাচাইকরণ পদ্ধতি প্রণয়ন এবং অবৈধ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতকরণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়।

এমআই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর