বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫, ঢাকা

এলপিজির দামে ওঠানামা প্রভাব ফেলছে জনজীবনে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ মে ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

শেয়ার করুন:

LPG
প্রতি মাসে নির্ধারণ করা হয় এলপিজির দাম। ছবি: ঢাকা মেইল

আজ রোববার (৪ মে) বিকেলে নতুন করে ঘোষণা করা হবে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরামকোর এপ্রিল মাসের ‘সৌদি কন্ট্রাক্ট প্রাইস’ (সিপি) অনুসারে ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হবে। একই সঙ্গে ঘোষিত হবে যানবাহনে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও।

এবার দাম বাড়বে, না কমবে? তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এ দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে কী রয়েছে, কীভাবে তা জনজীবনে প্রভাব ফেলবে।


বিজ্ঞাপন


ভোক্তারা বলছেন, এলজিপির দাম কমলে ভোক্তাদের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না সিন্ডিকেটের কারণে। আর দাম বাড়লেই তা ভোক্তার কাঁধে নানা দিক দিয়ে চেপে বসে।

এলপিজির বাজার কাঠামো ও মূল্য নির্ধারণের ধরন

বাংলাদেশে এলপিজি একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি উৎসে পরিণত হয়েছে গত এক দশকে। গ্রামাঞ্চলে জ্বালানির বিকল্প হিসেবে, শহরে রান্না ও বাণিজ্যিক কাজে এবং যানবাহনে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে এলপিজি। বর্তমানে দেশের দুই কোটির বেশি পরিবার এলপিজির ওপর নির্ভরশীল।

আরও পড়ুন

স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে বিইআরসি মাসভিত্তিক এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে। সৌদি আরামকোর ‘সিপি’ হলো আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম নির্ধারণের একটি মানদণ্ড, যার ওপর ভিত্তি করে আমদানিকারক দেশগুলো তাদের নিজস্ব বাজারে মূল্য নির্ধারণ করে। বাংলাদেশের বেসরকারি খাত প্রায় সম্পূর্ণভাবে এই সৌদি সিপির ওপর নির্ভরশীল। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সামান্য পরিবর্তনও সরাসরি প্রভাব ফেলে দেশের অভ্যন্তরীণ দামে।

দামের ওঠানামার পেছনের যুক্তি

গত মার্চে বিইআরসি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করে। ফেব্রুয়ারিতে এই দাম ছিল এক হাজার ৪৭৮ টাকা। এপ্রিল মাসে কোনো পরিবর্তন না এনে পূর্বের মূল্যই বহাল রাখা হয়। এখন মে মাসের জন্য বিইআরসি নতুন দামের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এর পেছনে প্রধান বিবেচ্য হলো, সৌদি আরামকোর এপ্রিলের মূল্য ঘোষণা। তবে মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্যান্য উপাদান যেমন আমদানি ব্যয়, ডলারের বিনিময় হার, পরিবহন ব্যয় এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকেই ডলারের বিনিময় হার বাড়ছে, ফলে আমদানিকৃত এলপিজির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দর সামান্য কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তা কতটা প্রতিফলিত হবে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব

এলপিজির মূল্য পরিবর্তন মানেই সরাসরি প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের জীবনে। একটি গৃহস্থ পরিবার মাসে গড়ে ১-২টি ১২ কেজি সিলিন্ডার ব্যবহার করে। সিলিন্ডারের দাম ২০-৩০ টাকা বাড়া বা কমা মানে সেই পরিবারের বাড়তি ব্যয় বা সাশ্রয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ, যাদের আয়ের সিংহভাগ চলে যায় দৈনন্দিন খরচে, তাদের ওপর এ ধরনের দাম বৃদ্ধি বাড়তি চাপ তৈরি করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার যখন অন্য খাতে ভর্তুকি কমাচ্ছে বা তুলছে, তখন জ্বালানির ওপর চাপ বেড়ে যায়। এলপিজির দাম বাড়লে একদিকে রান্না খরচ বাড়ে, অন্যদিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন খরচও বাড়ে। এর প্রভাব পড়ে পণ্যের মূল্যস্ফীতিতে।

এমআই/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর