দেশে টানা কয়েক মাস ধরেই মন্দা যাচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েক মাস ইতিবাচক ধারায় চলছিল জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। কিন্তু নভেম্বর মাস থেকে আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ছন্দপতন ঘটে। চলতি বছরের বছরের জানুয়ারিতেও সেটার ধারাবাহিকতা রয়েছে। অর্থাৎ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে মানুষ সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙছে বেশি। আর এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অধিকাংশ সময়েই নেতিবাচক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সপ্তম মাস জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ৪ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে। অর্থাৎ জানুয়ারিতে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৪ হাজার ৭৬৮ কোটি। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়েও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।
বিজ্ঞাপন
তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ষষ্ঠ মাস ডিসেম্বরেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক ধারায়। এই মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল তিন হাজার ৯২১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরেও ঋণাত্মক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ওই মাসে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত মাসেও (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। এই সাত মাসে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে সাত হাজার ১৩ কোটি টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়েও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি করতে হয়েছিল সাত হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের ১২ মাসে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসে আগের আসল ও সুদ বাবদ ২১ হাজার ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর আগে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সরকার এখান থেকে এক টাকাও ঋণ পায়নি।
টিএই/ইএ