বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

বাজেট স্বল্পতায় ঈদের কেনাকাটায় ‘টান’ সাধারণ মানুষের

আব্দুস সবুর লোটাস
প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম

শেয়ার করুন:

বাজেট স্বল্পতায় ঈদের কেনাকাটায় ‘টান’ সাধারণ মানুষের

কদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে জমে উঠেছে পোশাকের বাজার। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই ছুটছেন ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় মার্কেট ও বিপণি-বিতানে। বিক্রেতারা বলছেন, এবার সাধারণ মানুষ বাজেট কমিয়েছেন। এতে টান পড়েছে তাদের ঈদের কেনাকাটায়। আগে ঈদে একাধিক পোশাক কিনলেও এবার একটির বেশি নিচ্ছেন না।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সরেজমিনে মিরপুরের বিভিন্ন মার্কেট-শপিংমল ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।


বিজ্ঞাপন


মিরপুর ১০, ১ ও ২ ঘুরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনতে ছোট-বড় মার্কেট ও ব্র্যান্ডের আউটলেটে প্রচুর মানুষ ভিড় করছে। মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর, শাহ আলী মার্কেট, এফএস স্কয়ার, মরিপুর ২ নম্বর রাস্তার দু’পাশজুড়ে চন্দ্রবন্দিু, নবরূপ, স্বতেজ, দ্বসেজ, দেশীয় ব্র্যান্ডসহ ১ নম্বর সনি সিনেমা হল এরিয়ার, রূপায়ণ, লতফি শপিংমলসহ জায়গায় মানুষের ভিড়।

মিরপুর-১০ এর শাহ আলী প্লাজায় দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দুই মেয়ের জন্য ঈদের নতুন জামা কিনেছেন মরিন হোসেন। দুই মেয়ে ও স্ত্রীসহ কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি। এখন তার ও স্ত্রীর জন্য কেনাকাটা বাকি। এই প্রতিবেদককে জানালেন, মেয়েদের কেনাকাটায় খরচ হয়েছে বাজেটের অর্ধেক; ৫ হাজার টাকা। এই টাকায় কেনাকাটায় হয়ে যাওয়া বেশ খুশি প্রাইভেট সেক্টরের এই চাকরিজীবী।

thumbnail_1742791904228

মনির হোসেন বলেন, ইদের আগে অফিসে কাজের চাপ থাকে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময়ই পাওয়া যায় না। আজ অফিসের পর সবাইকে নিয়ে কেনাকাটায় বের হয়েছি। কিন্তু মার্কেটে মানুষের ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল কিছু কেনাকাটা করতে পারব না। তবে দুই মেয়ের নতুন জামা কেনার পর ভালো লাগছে।


বিজ্ঞাপন


এই চাকরিজীবী বলনে, ‘আমি খুব ছোট্ট একটা চাকরি করি। পরিবারে ৪ জন সদস্য। সবার জন্য ঈদ কেনাকাটার বাজেট ১০ হাজার টাকা। দুই মেয়ের নতুন জামা কিনতে খরচ হয়ছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। এখন অবশিষ্ট টাকা দিয়ে নিজের জন্য একটা পাঞ্জাবি ও স্ত্রীর জন্য থ্রি-পিছ কিনতে চাই।’

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আগেরবারের তুলনায় এবার কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে মার্কেটে মানুষের ভিড় কমেনি। প্রচুর মানুষ কেনাকাটা করতে এসেছে। তবে কেউ একটার বেশি কিনছে না।’

সনি সিনেমা হল এলাকায় কথা হয় জামিল রহমানের সঙ্গে। জানালেন বাজেট স্বল্পতার কথা। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, অল্প আয়ের সংসার আমার। পরিবারের ৫ জন সদস্য। ঈদ আসছে কেনাকাটা না করলে বাচ্চারা ঈদ করবে কীভাবে? তাই সবার জন্য কেনাকাটা করতে বের হয়েছি। কিন্তু সাধ্যের বাইরে এবারের বাজার। ঘোরাঘুরি করছি দেখা যাক, কোথায় মিলে যায়।

মিরপুর শাহ আলী প্লাজায় তনু ইসলাম নামের আরেক তরুণীর সঙ্গে দেখা হয়। বন্ধুর সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। তিনি বলেন, অনেক দোকান ঘুরলাম। কিন্তু নিজের কিছু পছন্দ হচ্ছে না। তবে বন্ধুর জন্য পাঞ্জাবি কেনা হয়েছে। এবার নিজের জন্য একটা থ্রি-পিছ কেনা হলেই কেনাকাটা শেষ।

বিক্রেতারা জানান, সকালে মানুষের ভিড় কম থাকে। তবে বিকেলের পর থেকে মানুষের মূল ভিড় শুরু হয়। এবার বিক্রির অবস্থা ভালো। শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিছ, বোরখা ও ওয়ান পিছ প্রচুর বিক্রি হচ্ছে৷ 

ক্রেতারা বলছেন, আগের বারের তুলনায় প্রতিটি পোশাকে এবার দাম বেড়েছে ৩০০-৫০০ টাকার মতো।

আরও পড়ুন-

প্রসাধনীর দাম বেড়েছে কয়েক গুণ, কমেছে ক্রেতা

শাহ আলী প্লাজার মর্ডান লেডিস গার্মেন্টেসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল জলিল বলেন, এবার ঈদের ভিড় শুরু হয়েছে আরও কিছুদিন আগে থেকেই। মানুষ ভালোই কেনাকাটা করছে। তবে মানুষের হাতে টাকা কম। তাই সবাই একটা করে কিনছে। আগে অনেক পরিবার একাধিক জামাকাপড় কিনত।

চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশনের মিরপুর আউটলেট ব্রাঞ্চের প্রধান কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, ইদ উৎসবের কেনাকাটার ভিড় এক সপ্তাহ ধরে চলছে। আমাদের ব্রাঞ্চে প্রচুর মানুষ আসছে এবার। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রিও চলছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত বেচাকেনা আরও ভালো হবে বলে আশা তার।

এএসল/ইএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর