মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

রমজানে গ্যাস সংকটে চরম ভোগান্তিতে গৃহিনীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫০ এএম

শেয়ার করুন:

রমজানে গ্যাস সংকটে চরম ভোগান্তিতে গৃহিনীরা

পবিত্র রমজান রাজধানীতে গ্যাস সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গৃহিনীরা। রমজানে ইফতার সেহেরি তৈরি দারুণ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। অনেকের ভরসা ইলেকট্রিক, সিলিন্ডার কিংবা মাটির চুলা। শুধু আবাসিকেই নয়, রাজধানীর ফিলিং স্টেশনগুলোতেও রয়েছে গ্যাস সংকট। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় দেখা দিয়েছে এই সংকট।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পবিত্র রমজান মাসে মুসল্লিদের ভোগান্তিতে না ফেলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। কিন্তু লোডশেডিং মুক্ত রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে বেশি। এছাড়া শিল্প, কলকারখানায়ও গ্যাস সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। আর এতেই টান পড়েছে বাসাবাড়ির গ্যাসের চুলায়। ফলে চুলায় গ্যাস না থাকায় সেহরির খাবার ও ইফতারি তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন গৃহিণীরা।


বিজ্ঞাপন


রাজধানীর বনশ্রী, খিলগাঁও, মেরাদিয়া, কাফরুল, শুক্রাবাদ, মোহম্মদপুর, বসিলা, কাঁঠালবাগান, কাঁটাবন, হাতিরপুল, যাত্রবাড়ী, শ্যামপুর, পান্থপথ, তেজগাঁও, মিরপুর, পল্লবীসহ রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় শুক্রবার (০৭ মার্চ) গ্যাসের তীব্র সংকটের খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ একদম কম। যেটুকু থাকে তাতে রান্না করা যাচ্ছে না- এমনটিই জানিয়েছেন কয়েকজন গৃহিনী। 

শ্যামপুরের বাসিন্দা খাদিজা বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেক দিন ধরেই গ্যাসের সংকট। ঠিকমতো রান্না করা যাচ্ছে না। এখন রোজায় এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ইফতার তৈরি ও সেহেরির খাবার রান্নায় হিমশিম খেতে হয়। বিকল্প হিসেবে সিডিন্ডার ব্যবহার করছি। এতে আমার দ্বিগুণ খরচ। তিনি জানান, গ্যাস না থাকলেও প্রতিমাসে দুই মুখী চুলার জন্য ১ হাজার ৮০ টাকা তিতাসকে দিতে হয়।  

খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা রহিমা বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, গ্যাস থাকে না বাসায়- এটা এখন নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। খাবার তো খেতে হবে তাই ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহার করছি। সামনে যদি লোডশেডিং থাকে তাহলে না খেয়ে থাকতে হবে। 


বিজ্ঞাপন


বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা বলছেন, কোনো কোনোদিন রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া গেলেও দিনের পুরোটা সময়ে দেখা মেলে না গ্যাসের। গ্যাস না থাকলেও মাস শেষে বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে।

তিতাস সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম থাকায় গ্যাসের এ সংকট। তবে অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে আশাবাদী তারা।

তিতাসের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১৯৬০ মিলিয়ন ঘনফুট চাওয়া হচ্ছে পেট্রোবাংলার কাছে। তবে মিলছে ১৫০০ মিলিয়নের মতো। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমস্যা কেটে যাবে।

শুধু আবাসিকেই নয়, রাজধানীর ফিলিং স্টেশনগুলোতেও রয়েছে গ্যাসসংকট। ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ রাখার সময় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। জ্বালানি বিভাগের নির্দেশে বলা হয়েছে, রমজান মাসে প্রতিদিন বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সব সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রাখতে হবে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনের চেয়ে সরবরাহ কম থাকায় দেখা দিয়েছে সংকট। ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাস না পাওয়ায় ফোন আসছে তিতাসের অভিযোগ কেন্দ্রে।

এমআর/ইএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর