- তিন মাসে আমানত বেড়েছে ২৪২৬ কোটি
- ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২৯৩৮ কোটি
- হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার
দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওয়ায় আনতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল এজেন্ট ব্যাংকিং। যত দিন যাচ্ছে আরও জনপ্রিয় হচ্ছে এই খাত। ব্যাংকের সাথে লেনদেন তথা টাকা জমা দেওয়া ও উত্তোলনের জন্য সাধারণ মানুষকে এখন আর জেলা কিংবা উপজেলা শহরে যেতে হয় না। হাতের নাগালেই পাচ্ছে ব্যাংকিং সুবিধা। সহজেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে ও উত্তোলন করতে পারছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের এজেন্ট ও আউটলুট থেকে ঋণ সুবিধাও পাচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিং সব সূচকেই বেড়েছে। এরমধ্যে হিসাব বেড়েছে প্রায় ছয় লাখ আর আমানত বেড়েছে দুই হাজার ৪০০ কোটিরও বেশি।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার ১০৯টি। আর তিন মাস পর অর্থাৎ ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৪০ লাখ ৭৮ হাজার ২৩০টি। সেই হিসাবে তিন মাসে হিসাব বেড়েছে পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার ১২১টি।
প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৫২৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯৫৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানত বেড়েছে দুই হাজার ৪২৬ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।
দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয় ২০১৪ সালে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংক এই সেবা দিয়ে থাকে। ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা এখন ইউনিয়ন পর্যায়েও নিয়ে গেছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ব্যাংকের সাথে লেনদেন সহজ করতেই মূলত এজেন্ট ব্যাংকিং চালু হয়েছে। এটা এখন সারাদেশে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ সাধারণ মানুষ হাতের কাছে ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে পারছেন। এমনকি সাধারণ মানুষ এখন এসব এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে ঋণও নিতে পারছে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ২১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। আর গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ঋণ বিতরণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে ঋণ বিতরণের স্থিতি বেড়েছে দুই হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

তথ্যানুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয়ের স্থিতি ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর শেষে প্রবাসী আয় আসার স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে প্রবাসী আয় আসার পরিমাণ বেড়েছে সাত হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের বড় অংশই গ্রামের মানুষ। এ সময়ে গ্রামে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৬১ লাখ ৭৩ হাজার ৪০৫ জন। এছাড়া, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে নারী গ্রাহকের সংখ্যা এখন এক কোটি ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৫ জন। তার আগের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকেও নারী গ্রাহক ছিল এক কোটি ১৭ লাখ চার হাজার ৮৪৬ জন। তিন মাসে নারী গ্রাহক বেড়েছে দুই লাখ ৭৭ হাজার ৮২৯ জন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্টের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ১১টি। আর ডিসেম্বর শেষে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২১টি। সেই হিসাবে তিন মাসে এজেন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১০টি। এছাড়া, সেপ্টেম্বর শেষে আউটলেটের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৩৬৭টি। আর ডিসেম্বর শেষে আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২৪৮টি। সেই তিন মাসে আউটলেটের সংখ্যা কমেছে ১১৯টি।
টিএই/জেবি

