বিনা নোটিসে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাপেওএ), রাজশাহী বিভাগ ।
এসময় বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের ডিপো থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রাখার কথা বলেছে রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
বিজ্ঞাপন
নেতারা জানান, গত ২৯ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শনের পর অবৈধ ঘোষণা করে মাইকিং করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফয়সালা করলেও, নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি পাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে বৈধভাবে লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে সবাই। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা লিজের পরিবর্তে ওই জায়গা কিনে নিতে বলছে। তেল ব্যবসায়ীরা জায়গা কিনে নিতে রাজি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জায়গা লিখে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে তারা স্বেচ্ছাচারীভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান। এই স্বেচ্ছাচারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলে সব ধরনের তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাপেওএ রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মিজানুর রহমান রতন এবং রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা, নোটিস বা আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রদান না করে আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অযৌক্তিক ও অন্যায় অভিযানের ফলে পেট্রোল পাম্প মালিকগণ চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমরা এই অভিযানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এতে আরও বলা হয়, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত সব নিয়ম-কানুন মেনে ও বৈধ লাইসেন্স অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে আমরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছি। অথচ, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালিত হয়ে আসলেও অতীতে কখনো এমন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। এতে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
কোনো নোটিস ছাড়া তারা মূলত পাম্পগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ করে মো. আব্দুল জলিল বলেন, হামিম পাম্পে মিটার ফেলে দেওয়া ও অতি উৎসাহিতভাবে ড্রেন খুলে দেওয়া হয়, যেন পাম্পে গাড়ি ঢুকতে না পারে। একইভাবে আনিকা পাম্পেও ভাঙচুর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবছর উচ্ছেদ অভিযান চললেও ২৬ বছরে পুরোনো পাম্পে কখনও এই ধরনের অভিযান দেখা যায়নি দাবি করে তিনি বলেন, আমাদেরকে কোনো নোটিস কিংবা সময় দিয়েছে এ ধরনের কোনো ডকুমেন্ট যদি দেখাতে পারে তাহলে আমরা মেনে নেব। কিন্তু আমাদেরকে কোনো কিছু না বলে মাইকিং করে। এ ধরনের মাইকিং অনেক শোনা গেলেও পাম্পের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা কোনোদিন ঘটেনি। এই পামগুলো তো একদিনের জন্য না।
ইএ