রোববার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ডিম খাওয়াও কমাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১২ এএম

শেয়ার করুন:

ডিম খাওয়াও কমাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ!

অনেকদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। লাগামহীন দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ মাছ-মাংস খাওয়া আগেই কমিয়ে দিয়েছেন। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী যাত্রায় প্রাণিজ আমিষ বলতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিল ডিম। এখন ডিমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। এমন অবস্থায় সংসারের ব্যয় কমাতে ডিম খাওয়াও কমাতে শুরু করেছেন নিম্ন আয় ও শ্রমজীবী মানুষ।

গত ৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন বলে অনেকে আশা করলেও এখন পর্যন্ত তার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। দাম নিয়ন্ত্রণে ডিমের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও বাস্তবে সেই দামে মিলছে না এই নিত্যপণ্যটি। শুধু কাগজে কলমেই সরকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ডিম। অথচ বাস্তবে কোনো কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠান আদায় করছে বাড়তি দাম। ফলে থামছে না ডিমের বাজারের অস্থিরতা। ডিমের দামে অসন্তোষ থাকলেও তাতে পাত্তাই দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। ফলে ডিমের অতিরিক্ত দাম সরাসরি ভোক্তার আমিষের চাহিদায় টান ধরিয়েছে। গরুর মাংসের মতো ডিমও এখন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য  বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর স্থানীয় দোকানগুলোতে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ডিম ১৬০ টাকা এবং বড় আকারের ডিম ১৮০ টাকা ডজন বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।

মগবাজারের একটি মেস বাড়িতে রান্না কাজ করা আছিয়া বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী সাধারণত ডিম নিয়মিত খাই না। তবে দুই সন্তানকে খাওয়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু এখন যেভাবে ডিমের দাম বেড়েছে তাতে নিয়মিত খাওয়ানো কঠিন হয়ে গেছে। আমি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। প্রথম কয়েকদিন প্রতিদিন ডিম খাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের আয় কম, এত টাকায় নিয়মিত খাওয়া সম্ভব না।

নিম্নআয়ের মানুষ ছাড়াও ডিমের দাম নিয়ে বিপত্তিতে পড়েছেন মেসে থাকা ব্যাচেলররা। মগবাজারের নিম্নআয়ের মানুষ থাকেন এমন একটি মেসের ম্যানেজার ফয়সাল ঢাকা মেইলকে বলেন, মেসের খাবার অনেকটা ডিম নির্ভর। বিশেষ করে মাসের শুরু ও শেষের দিকে মিলে টাকা থাকে না। তখন ভর্তা ও ডিমের ওপর দিয়ে মিল চলে। ডিমের দাম গত কিছুদিন ধরে অনেক বেড়ে যাওয়ায় ডিমের মিল চালানোও কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।

মগবাজার এলাকায় কথা হয় এক রিকশাচালকের সঙ্গে। সাজু নামে ওই রিকশাচালক বলেন, দাম বাড়ায় এখন হোটেল-রেস্তোরাঁয় একটি ডিমভাজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে। আর ডিমের তরকারি প্রতি বাটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এখন ডিম দিয়ে ভাত খাওয়াও আমাদের জন্য কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বিজ্ঞাপন


মগবাজারের সিয়াম স্টোরের দোকানি জামাল মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, ডিমের চাহিদার তেমন তারতম্য ঘটেনি। তবে দাম বাড়ায় একসঙ্গে ডজন নেওয়ার ক্রেতা কমেছে। প্রয়োজন অনুসারে হালি না পিস হিসেবেই বেশি ডিম কিনছেন ক্রেতারা।

এমএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর