শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রিজার্ভে চাপ পড়লেও ভয়ের কিছু নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২২, ০২:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

রিজার্ভে চাপ পড়লেও ভয়ের কিছু নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী

রিজার্ভে চাপ পড়লেও ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন


করোনা সংক্রমণ শুরুর পর আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, কাঁচামাল, জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম আরও বেড়ে যায়। পাশাপাশি বেড়েছে জাহাজের ভাড়াও। এর প্রভাবে আমদানি ব্যয়ও লাগামহীনভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ পড়েছে।

আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপে মার্কিন ডলারের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে বাজারে সরবরাহ না বাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে ডলারের দাম।

আজ সচিবালয়ে রিজার্ভের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুই বছর আমাদের আমদানি কম ছিল। এখন খুলে যাওয়ায় ক্যাপিটালে প্রভাব পড়েছে, দুই বছরের চাপ পড়েছে একসঙ্গে। সবকিছু মিলে একটা প্রভাব পড়েছে। আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভে চাপ পড়েছে। গত দুই বছর আমদানি কমায় বেড়েছিল রিজার্ভ। এখন চাপ পড়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে এ সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব।’

এ সময় ভোজ্যতেল নিয়েও কথা বলেন টিপু মুনশি। বলেন, ‘আমাদের ভোজ্যতেলের ৯০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, যে কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এর দাম। বিশেষ করে তেলের দাম বৃদ্ধির বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া আছে সে প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দাম নির্ধারণ করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে আমাদের দেশেও দাম বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বিকল্প পদ্ধতিতে কিভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করা যায়। সেটা আমদানি করে হোক অথবা আমাদের দেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করে হোক।


বিজ্ঞাপন


মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের যে রাইস ব্র্যান্ড ওয়েল উৎপাদন হয়, সেটাকে যদি ভালোভাবে উৎসাহ দেওয়া হয় তাহলে ভোজ্যতেলের প্রায় ২৫ ভাগ এখান থেকে পাওয়া সম্ভব। এখান থেকে প্রায় সাত লাখ টন তেল উৎপাদন সম্ভব। এই তেলের খরচ একটু বেশি পড়লেও গুণগতমান অনেক ভালো। এ বিষয়ে গণমাধ্যম ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানান দিতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে সংকট সৃষ্টি হলেও এখান থেকে বেশ কিছু পাওয়া বেরিয়ে আসছে। খুঁজতে হচ্ছে নতুন নতুন পথ। আমরা চেষ্টা করছি আমদানি বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে।

টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে চিন্তা করার কিছু নাই। মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিকভাবে একটি মনিটরিং করছে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও সেটা ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হতো তাহলে দেশের কৃষকরা দাম পেত না। এখানেও আমাদের বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গম সূর্যমুখী আমদানি করা হতো ইউক্রেন থেকে কিন্তু এখন সেটা বন্ধ রয়েছে যার প্রভাব বাজারে পড়েছে। তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব বিভিন্ন সেক্টরে পড়ে। তবে দ্রব্যমূল্যের এই পরিস্থিতি নিয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। বাস্তবতা হলো এটি রাজনৈতিক বক্তব্য বাস্তবের সঙ্গে এর কোনো মিল নাই।

‘অভিযান চালিয়ে যেখানে তেল অতিরিক্ত মজুদ পাওয়া যাচ্ছে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাদের নজর রাখতে হয় ব্যবস্থা নিতে গিয়ে বাজারে যেন প্রকৃতির সৃষ্টি না হয় তাহলে বাজারের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।-বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

গম আমদানির জন্য সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ইউক্রেন ও ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধ হওয়ার পর আমরা চেষ্টা করছি আরও অন্তত পাঁচটি গম উৎপাদনকারী দেশের সঙ্গে যেখান থেকে আমদানি করা সম্ভব হবে।

টিএ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর