শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

সরকারের বেধে দেওয়া দামের তোয়াক্কা নেই খুচরা বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

সরকারের বেধে দেওয়া দামের তোয়াক্কা নেই খুচরা বাজারে

সরকারের বেধে দেওয়া ২৯ পণ্যের দাম কার্যকর হয়নি খুচরা বাজারে। একমাত্র ডিম ছাড়া নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য পণ্য। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি, তাই খুচরা বাজারেও দাম কমছে না। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর তিনটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে৷ 


বিজ্ঞাপন


এর মধ্যে আগারগাঁও বিএনপি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে৷ 

যদিও সরকারি নির্দেশনা- ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা হবে। 

কিন্তু বাজারগুলোতে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা বেশি দাম আদায় করা হচ্ছে। 

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা হবে। 


বিজ্ঞাপন


তবে এ দাম বাস্তবায়ন হয়নি খোলা বাজারে। আগারগাঁও বিএনপি বাজারে গরুর মাংস ৮০০ টাকা, মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ বাজারে ৮০০ টাকা, একই এলাকার নবোদয় হাউজিং বাজারে মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ নির্ধারিত দামের তুলনায় কেজিপ্রতি ১৩৬ টাকা পর্যন্ত বেশি আদায় করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন

মাছ-মাংসসহ ২৯ নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিলো সরকার

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একমাত্র কমে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। নির্ধারিত দামের তুলনায় হালি প্রতি দুই টাকা কম পাচ্ছেন ক্রেতারা।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিমের (এক পিস) উৎপাদন খরচ ৮ টাকা ৮১ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম ৯ টাকা ৫ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৯ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ টাকা ৪৯ পয়সা হবে। 

তবে খোলা বাজারে ৪০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে ডিম। দাম কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, গরমে ডিম নষ্ট হয়। তাই খামারিরা তুলনামূলক কম দামেই ডিম সরবরাহ করছেন। তারই ইতিবাচক প্রভাব পরেছে খুচরা বাজারে। 

দেশি পেঁয়াজের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজার মূল্য ৫৩ টাকা ২০ পয়সা ও খুচরা ৬৫ টাকা ৪০ পয়সা ধার্য করা হয়েছে। তবে খুচরা বাজারে দাম কমেও নির্ধারিত দামের চাইতে ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। 

সরকারি নির্দেশনার প্রভাব নেই রসুন ও আদার ক্ষেত্রে। দেশি রসুনের খুচরা মূল্য হওয়ার কথা ১২০ টাকা ৮১ পয়সা। খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। 

আমদানিকৃত আদার খুচরা দাম হওয়ার কথা ১৮০ টাকা ২০ পয়সা। কেজিতে ৪০ টাকা বেশি হারে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আদা। 

কেজিতে ১২৩ টাকা বেশি শুকনো মরিচের দাম। নির্ধারণ করা দাম অনুযায়ী পাইকারি বাজার মূল্য হবে ২৫৩ টাকা ২৬ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ৩২৭ টাকা ৩৪ পয়সা। 

তবে মোহাম্মদপুর ও আগারগাঁও এলাকার বাজারে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে শুকনা মরিচ। 

কেজিতে ৪০ টাকা বেশি কাঁচা মরিচের দাম। যদিও বাজারে এ পণ্যের দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১২০ টাকা। এ সপ্তাহে তা ১০০ টাকা। তবে সরকার নির্ধারিত খুচরা দাম ৬০ টাকা ২০ পয়সা। 

খুচরা পর্যায়ে বাঁধাকপির দাম ২৮ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা। যা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা পিস দরে। 

আরও পড়ুন

লেবুতে বিনিয়োগ বেড়েছে, লাভ ‘বাড়েনি’ খুচরা বিক্রেতাদের

এছাড়াও ফুলকপির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ টাকা ৬০ পয়সা। বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা পিস দরে। 

দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তেমন কোনো উত্তর মেলেনি খুচরা বিক্রেতাদের থেকে। তাদের ভাষ্য, পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব রয়েছে।  

খুচরা পর্যায়ে ৪৯ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে বেগুনের দাম। তবে এখনও প্রতি কেজি বেগুনের জন্য ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। 

শিমের কেজি পাইকারি বাজারে ৪০ টাকা ৮২ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে খুচরা পর্যায়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে শিম। 

কমার পরিবর্তে ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে আলুর দাম। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে ২৮ টাকা ৫৫ পয়সা হবে প্রতি কেজি আলু। কিন্তু গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু এ সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

৪০ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।  ২৩ টাকা ৩৮ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া মিষ্টিকুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। 

৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা চিড়া। কিন্তু ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। 

এছাড়াও সাগর কলার হালি পাইকারি বাজার মূল্য ২২ টাকা ৬০ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৯ টাকা ৭৮ পয়সা বিক্রি হওয়ার কথা। বাজারে আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কলা। 

বেসন পাইকারি বাজার মূল্য ৯৯ টাকা ২ পয়সা ও খুচরা বাজারে ১২১ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা। সেখানে বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি দরে৷ 

কারই/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর