হঠাৎ করে বাজারে বেড়ে যাওয়া চালের দামে লাগাম টানতে নড়েচড়ে বসেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয়বারের মতো খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সাধন চন্দ্র মজুমদার চালের দাম কমাতে মজুদদারদের আলটিমেটাম দিয়েছেন। চার দিনের মধ্যে চালের দাম না কমালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মন্ত্রী। দাম না কমলে প্রয়োজনে চাল আমদানি করা হবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে খাদ্য অধিদফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এই কথা জানান। এর আগে ধান-চাল বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধকল্পে একটি মতবিনিময় সভায় যোগ দেন মন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, শপথ নেওয়ার পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। ভরা মৌসুমে দাম বাড়ার কারণ নেই। ফুডগ্রেড লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া ধান-চাল মজুতকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। আটটি বিভাগে কাল থেকে একযোগে অভিযান চলবে।
চাল সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন মজুদ আইন হয়েছে। জোরপূর্বক প্রয়োগ করতে চাই না। ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রতিপক্ষ না। সাত দিন পর পর প্রত্যেকের মজুদ ও কেনার তথ্য জানাতে হবে। সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নতুন পদ্ধতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করব। একদিকে অভিযান অন্যদিকে বিবেক। বাজার স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছি। দাম কোনোভাবে বাড়াতে পারবে না।
এদিকে নির্বাচনের পর হঠাৎ করে বাজারে বেড়ে গেছে চালের দাম। পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ থাকার পরও পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যটির দাম। পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতিমণে বেড়েছে ৮০ থেকে ৩২০ টাকা। আর খুচরা বাজারে প্রকারভেদে সব ধরনের চাল কেজিতে দুই থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ভরা মৌসুমেও চালের এই অস্বাভাবিক দামে ফুঁসছে ক্রেতাসাধারণ।
এবারের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। মন্ত্রিসভা গঠনের পর সরকার যে কয়টি বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে নিয়েছে এর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বাজারে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। যেকোনো মূল্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে সেখানেও মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার টার্গেট নিয়েছে। ১২ শতাংশের ঘরে চলে যাওয়া মূল্যস্ফীতি গত ডিসেম্বরে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এখনো তা ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। সরকারের টার্গেট তা ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা।
জেবি