ব্যাঙের বিয়ে! তাও ধুমধাম করে। বৃষ্টির আশায় গ্রামবাংলার লোকজ রীতি পালন করে শেরপুরের নকলায় ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন চলছে। উপজেলার টালকী ইউনিয়নের বড় পাগলা গ্রামে এ ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বুধবার (৭ জুন) দুপুরে বড় পাগলা গ্রামের নায়েবের বাড়িতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিয়ের প্রস্তুতি ও রান্নাবান্নার কাজ চলছে।
বিজ্ঞাপন
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, অনাবৃষ্টি ও খরা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে শিশুরা বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের এই ধরনের বিয়ের আয়োজন করে। পরে তা উৎসবে রূপ নেয়। বড়রাও এতে যোগ দেন। গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ধরে রাখতেই তাদের এ আয়োজন। তাদের বিশ্বাস, ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়।
আয়োজক দলের সদস্য স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ, শান্ত মিয়া ঢাকা মেইলকে জানায়, মেঘ নামের বর ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হবে বর-কনেকে। টিপ পরিয়ে ও আলতা দিয়েও সাজানো হবে কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকেলে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বরযাত্রী নিয়ে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসবে বর পক্ষ। বাড়ি বাড়ি থেকে ওঠানো হয় চাল-ডাল-তেল। বড়রা টাকাও দিয়েছে। এগুলো দিয়ে রান্না করা হচ্ছে খিচুড়ি।
এদিকে ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে জড়ো হয়েছে উৎসুক নারী-পুরুষ।
এ আয়োজন দেখতে আসা নকলা শহরের বাসিন্দা সাত্তার মিয়া বলেন, ব্যাঙের বিয়ের কথা পেপার পত্রিকায় কেবল পড়েছি। কিন্তু বাস্তবে কখনো দেখেনি। আজ দেখতে আসলাম।
বিজ্ঞাপন
স্কুল শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার বলেন, চমৎকার লেগেছে এ আয়োজন। পুরোপুরি বিয়ের মতোই ছিল এইটা। আমরা বান্ধবীরা উপভোগ করলাম ব্যাঙের বিয়ে, রান্না শেষ হলে খিচুড়িও খাবো।
আয়োজক কমিটির সদস্য সোহেল রানা জানায়, অনাবৃষ্টি ও খরা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে শিশুরা এই ব্যাঙের বিয়ের উদ্যোগ নিলেও তা পরে উৎসবে রূপ নেয়। বড়রাও যোগ দেন। গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ধরে রাখতেই আমাদের এ আয়োজন।
স্থানীয় নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, লোকজ বিশ্বাস থেকে আবহমান বাংলার এটি একটি সংস্কৃতির অংশ। এমন লোকজ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে।
প্রতিনিধি/এইচই