গাজীপুর সদর থানার আদাবৈ এলাকা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার বিউটি পার্লার মালিক রুবিনা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মূল পরিকল্পনাকারী মিঠুন চন্দ্র ঘোষ ওরফে মৃদুল হাসানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ ।
বুধবার র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এ এস এম মাঈদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতার মিঠুন চন্দ্র ঘোষ ওরফে মৃদুল হাসান গাজীপুরের খুদে বরমী গ্রামের নিতাই চন্দ্র ঘোষের ছেলে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গত ৪ জুন আদাবৈ এলাকার রাজকন্যা বিউটি পার্লারের পেছনের রুমে হাত-পা ও মুখ বাঁধা এবং কাঁথা দিয়ে মুখ পেঁচানো অবস্থায় বিউটি পার্লারের মালিক রুবিনা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে নিহতের মা আছিয়া বেগম সদর থানায় বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-১ এর আভিযানিক দল ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আসামি মিঠুন চন্দ্র ঘোষ ওরফে মৃদুল হাসানকে পাবনা জেলার সদর থানার মৃত বাবলুর বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মিঠুন চন্দ্র ঘোষ ভিকটিম রুবিনা আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানায় , ভিকটিম রুবিনা আক্তার এবং আসামি মিঠুন চন্দ্র ঘোষের আনুমানিক ১ বছর দুই মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের শুরুর দিকে তাদের মাঝে সম্পর্ক ভালো থাকলেও পরবর্তীতে দাম্পত্য কলহ এবং একে অন্যকে পরকীয়ার সন্দেহে উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
পরবর্তীতে আসামি ভিকটিম রুবিনা আক্তারকে দাম্পত্য কলহের জের ধরে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। এ বিষয়ে ভিকটিম রুবিনা আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ জানালে আসামি মিঠুন ভিকটিমকে ছেড়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে ভিকটিম রুবিনা আক্তার আসামি মিঠুন চন্দ্র ঘোষের কাছে ভরণ-পোষণ এবং দেনমোহরের টাকা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে আসামি মিঠুন চন্দ্র ঘোষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ জুন তার অন্যতম সহযোগী সুমা রানী ঘোষের (৩২) (পুলিশ কর্তৃক আটককৃত) মাধ্যমে ভিকটিমের রাজকন্যা বিউটি পার্লারে প্রবেশ করে এবং অপর সহযোগী রাকিবকে বিউটি পার্লারের বাইরে পাহারায় বসিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে ভিকটিমের হাত-পা ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আসামিরা পালিয়ে যান।
প্রতিনিধি/একেবি