শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিসিসি নির্বাচনে লাঙলের মেয়র প্রার্থী তাপসের ইশতেহার ঘোষণা

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ জুন ২০২৩, ০২:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

বিসিসি নির্বাচনে লাঙলের মেয়র প্রার্থী তাপসের ইশতেহার ঘোষণা

বরিশাল সিটি করপোরেশনকে (বিসিসি) উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা, শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণসহ নগরবাসীর স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকার নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করছে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস।

রোববার (৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল ক্লাবের অমৃত লাল দে মিলনায়তনে ৩০টি নির্দিষ্ট খাতে উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে ঘোষিত ইশতেহারে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলসহ পর্যটন এবং শিশু ও নারীবান্ধব নগরী গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাপস।


বিজ্ঞাপন


ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমি মনে করি না এখনও বরিশাল সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা একটু সুযোগ সুবিধা বেশি পাবেন, তারমানে এই নয়, তারা নিয়ম ভেঙে রাস্তাঘাট দখল করে নির্বাচনি কার্যালয় বসাবেন। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের ৪ থানা এলাকায় ৪টি অফিস বসানোর কথা বলেছে। সেখানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি কার্যালয়ের অভাব নেই। আবার তাদের লোকজন শহরে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিত সৃষ্টি করছে। প্রশাসনও সবার সঙ্গে সমান আচরণ করছে না। আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে বরিশাল শহরকে উৎপাদনমুখী করার লক্ষ্যে সবার আগে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ এখানে সৃষ্টি করা, মা ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা এবং বরিশাল শহরে একটি আইটি সিটি গড়ার উদ্যোগ সবার আগে গ্রহণ করবো।

তাপস আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যে স্লোগানগুলো দিচ্ছেন, তার ওপর জোর দিলে আমাদের আইটি সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বরিশাল সিটিতে আমরা আইটির সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সরকারকে যেমন সহায়তা করা হবে, তেমনি তরুণ সমাজের উপার্জনের ব্যবস্থা হবে।

তিনি বলেন, বরিশাল নগরবাসীর স্বপ্ন-পূরণে নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো হলো- বরিশাল সিটি করপোরেশনকে উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা। প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ ও জনসাধারণের হাঁটার জন্য ফুটপাথের ব্যবস্থা করা। রাস্তা-ঘাট নির্মাণের দরপত্রে ১০০% স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা।  শহরের ঐতিহ্যবাহী খালসমূহ খনন ও সংস্কার করে পুনরুদ্ধারসহ দুই পাড়ে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও ফুটপাত নির্মাণসহ জনসাধারণের হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করা। শহরের ঐতিহ্যবাহী দিঘী ও পুকুর সংস্কার করে পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তোলা। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় সূর্যোদয়ের আগে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক ওয়ার্ডে কম খরচে/ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা। প্রতিটি মহল্লা ও সড়কে ডিজিটাল বাতি স্থাপন করা। শহরের প্রতিটি মহল্লায় রাতে পাহারার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা গেট নির্মাণ করা।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন করা। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় আধুনিক কম্পিউটার কারিগরি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বেকার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আউট সোর্সিং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। নগরে অবস্থিত ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আধুনিকরণ করা।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সহাবস্থান নিশ্চিত করা। ওয়ার্ডে কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা।  প্রতিটি ওয়ার্ডে সাংস্কৃতিক ক্লাব ও খেলাধুলার মাঠ প্রতিষ্ঠা করা। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহকে সংস্কার ও আধুনিকরণ করা ও স্কুল সমূহে শিশুদের জন্য শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা। কীর্তনখোলার তীর ঘিরে ভ্রমণ, আধুনিক ওয়াকওয়েসহ পার্ক গড়ে তোলা।  বরিশালে পর্যটন হোটেল-মোটেল নির্মাণ ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা। মাদক নির্মূল করা ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলা। ধর্মীয় স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা।

বরিশাল সিটিকে সবুজায়ন করার প্রকল্প গ্রহণ করা। শহরের বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা। বয়স্ক নাগরিকদের অগ্রাধিকারভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা চালু করা। নগরের বর্ধিত এলাকায় পরিকল্পিত আধুনিক আবাসন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎসহ সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা প্রদান করা হবে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত অনুন্নত কলোনি বা বাস্তহারা বাসিদের সকল প্রকার নাগরিক সুবিধার আওতায় আনা হবে।

এসময় তার সঙ্গে সহধর্মিনী ইসমত আরা ইকবাল টুপুর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মহসিন উল ইসলাম হাবুলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর