শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নামে বিল হচ্ছে নেত্রকোনায়

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৩, ১০:২৫ পিএম

শেয়ার করুন:

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নামে বিল হচ্ছে নেত্রকোনায়

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম লিখা বিলের কাগজ। এ নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন গ্রাহকরা। অনেকে বিলের কাগজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে এর কারণ জানতে চাইছেন। এতে বেশির ভাগ মানুষ নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। হাসি ঠাট্টাসহ ট্রোল করছেন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মে মাস থেকে জেলাজুড়ে গ্রাহকদের নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম লিখা কাগজে বিল দেওয়া দেওয়া হচ্ছে। এতে বিলের দুই অংশের উপরে বড় অক্ষরে ‘নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’ লিখা রয়েছে। ভেতরে নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাহকের নাম ঠিকানা, মিটার নম্বর,  ইউনিট ও বিলের পরিমাণ রয়েছে। প্রায় গ্রাহকই এই বিলের কাগজ পেয়ে হতাশায় পড়েছেন। এই বিল নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুত সমিতিতে জমা দেওয়া যাবে কিনা এ নিয়ে অনেক গ্রাহক শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি জানতে নানা জনের দ্বারস্থ হয়েছেন সাধারণ  গ্রাহক। কেউ কেউ বিলের কাগজ ফেসবুকে শেয়ার করে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তবে সেখানে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।


বিজ্ঞাপন


বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের  আল রুমান জানান, মে মাসের শেষের দিকে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বাসায় দিয়ে গেল এক ব্যক্তি।  হাতে নিয়ে দেখি উপরে নেত্রকোনার জায়গায় ‘নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’ লিখা রয়েছে।  অনেকটা টেনশনে পড়ে যাই।  মনে হচ্ছে এই বিল নোয়াখালী গিয়ে জমা দিতে হবে।  ফেসবুকে পোস্ট করলাম এই ভেবে- যদি কেউ এ বিষয়ে কোন সঠিক সমাধান দেন। অনেকে বিষয়টি নিয়ে হাসি ঠাট্টা করেছেন। তবে সবার বিল একই রকম হলে সমস্যা ছিল না। কারো কারো বিল নেত্রকোনার কাগজেই হয়েছে। এটাই বড় সমস্যা। এতে গ্রহক বিব্রত হচ্ছে।

মোহনগঞ্জ উপজেলার গ্রাহক কামরুল ইসলাম রতন বলেন, পল্লীবিদ্যুতের সমস্যার কথা বলে আর লাভ নেই। তাদের সবকিছু সমস্যা। আমার পরিবারের কয়েকজনের বিল নোয়াখালী পল্লীবিদ্যুতের কাগজে দেওয়া হয়েছে। আমার নিজের বিল নেত্রকোনার কাগজে হলেও ৫০০ টাকার বিল করা হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। পরে অভিযোগ দিয়ে ঠিক করিয়েছি। বিলের কাগজে নোয়াখালী লিখা থাকার কারণে গ্রাহক বিভ্রান্তিতে পড়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আমার কাছে বিল নিয়ে এসেছেন বিষয়টি জানতে।

বারহাট্টা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান খান বলেন, আমাদের বিলের কাগজ সংকট তাই নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিল পেপার ব্যবহার করছি। পেপারস ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পরেই আমাদের পেপারে বিল পাবেন গ্রহকরা।  কাগজে নোয়াখালী লিখা থাকলেও ভেতরে আমাদের গ্রহকের নাম, মিটার নম্বরসহ সব তথ্য আছে। এতে বিল দিতে কোন সমস্যা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা পল্লীবিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজর (জিএম) প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমাদের বিলের কাগজ সংকট। অন্যদিকে নোয়াখালীতে উদৃত্ত থাকায় সেখান থেকে আনা হয়েছে। তাই বিলের কাগজে নোয়াখালী লিখা। তবে ভেতরে নেত্রকোনার গ্রাহকের নাম, মিটার নম্বরসহ যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করা আছে। এতে কোন সমস্যা হবে না। অন্য কোন জেলার কাগজ ব্যবহার আরও কয়েকবার আমরা ব্যবহার করেছি। নেয়াখালী পল্লীবিদ্যুত সমিতিও আমাদের কাগজ অনেক সময় ব্যবহার করে। এমনটা হয়েই থাকে।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, নতুন বাজেটে পল্লীবিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অভিন্ন বিল পেপার হবে। এদিকে কাগজের দাম বৃদ্ধি সব মিলিয়ে কয়দিনের জন্য আর নতুন ক্রয় প্রক্রিয়ায় যাওয়া হয়নি।  আমাদের সমিতির যেখানে উদৃত্ত কাগজ আছে সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। জুলাই থেকে অভিন্ন বিল পেপার চালু হবে। তাই এই দুই-তিন মাস নোয়াখালীর বিল পেপার ব্যবহার হবে। আর এখন তো ডিজিটাল সব কাগজের দরকার পড়ে না। মোবাইল ব্যাংকিং থেকে যেকোন গ্রাহক তার বিল দিতে পারেন। কাগজ এখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর