বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জামালপুরে কুকুর আতঙ্ক

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩, ১১:২০ এএম

শেয়ার করুন:

জামালপুরে কুকুর আতঙ্ক

জামালপুর শহরবাসীর মধ্যে এখন কুকুর আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তায় বের হলেই কুকুরের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে পথচারিদের। গেল ৩ দিনে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন প্রায় ৭০ জন। কুকুরের কামড়ে আহতরা ভ্যাকসিন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন।

কিন্তু আক্রান্তদের অভিযোগ, জেলা হাসপাতালে গিয়ে রেবিস ভ্যাকসিন না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। বাধ্য হয়েই চড়া মূল্যে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে তাদের।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুইটি ভ্যাকসিনের মধ্যে আক্রান্তদের বিনামূল্যে রেবিস আরআইটি দেওয়া যাচ্ছে। অপর রেবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না। আক্রান্তদের সেটি কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।

অপরদিকে, প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক তাদের কাছে নেই। স্বাস্থ্যবিভাগের কাছেও নেই মানুষের জলাতঙ্ক প্রতিরোধের রেবিস ভ্যাকসিন। এ অবস্থায় কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে রেবিস ভ্যাকসিন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকার কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র।

dog

সরেজেমিনে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, তিনদন ধরে দলবদ্ধ পাগলা কুকুর আক্রমন চালায় শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়, সর্দারপাড়া, শেখের ভিটা, বগাবাইদ, জিগাতলা, ডাকপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। এ খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শহর জুড়ে। কুকুর আতঙ্কে অনেকেই ঘরবন্দি করে রেখেছেন শিশু-কিশোরদের। বয়স্করাও ভয় পাচ্ছেন বাইরে বের হতে। কুকুরগুলো মানুষের দোকানে, চলন্ত ইজিবাইকে লাফিয়ে ওঠে মানুষকে কামড়াচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


জিগাতলা এলাকার বাসিন্দা পুষ্পা বেগম বলেন, সকালে তিনি বাজার করার জন্য বাসা থেকে বের হন। তিনি হেটে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই একটি কুকুর পিছন থেকে এসে তার পায়ে কামড় দেয়। হাত দিয়ে ছাড়াতে গেলে হাতেও কামড় দেয়। অনেক ধস্তাধস্তির পর জ্ঞান হারান তিনি।

বউ বাজার এলাকার আওয়াল মিয়া জানান, কুকুর এখন আমাদের এলাকার আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দল বেধে ঘুরাফেরা করে এসব কুকুর। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের ওপর হামলা করছে এসব কুকুর। তাকেসহ সে এলাকার আরও ১৫-২০ জনকে কুকুর কামড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

dog

জিগাতরা এলাকার ছামেনা বেগম বলেন, কুকুরের ভয়ে এখন আমরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাই। দোকানের ভিতরে এসে কুকুর কামড় দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা গাড়িতেও হামলা করছে এসব কুকুর। একটা কুকুরকে মারতে গেলে অন্য কুকুররা এসে হামলা করে মানুষের ওপর।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান জানান, কুকুরে কামড়ানো রোগীদের দুইটি ভ্যাকসিন দিতে হয়। এরমধ্যে একটি ভ্যাকসিন হাসপাতালে সরবরাহ আছে, সেগুলো দেওয়া হচ্ছে। অন্য ভ্যাকসিনটি হাসপাতালে সরবরাহ না থাকায় সেই ভ্যাকসিনটি অনেকেই বাইরে থেকে সংগ্রহ করেছেন।

এ ব্যাপারে জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে কুকুর নিধন না করার। পৌরসভায় কুকুরের জন্ম নিরোধক ভ্যাকসিন নেই, এসব জুন মাসে বরাদ্দ আসে। তবে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে জলাতঙ্কের কিছু ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে কুকুরের উৎপাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করা হবে।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর