পাবনায় গ্রাজুয়েট তরুণের বাগান দেখতে জনতার ভিড়

বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে আসা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আসলে আমাদের এলাকাতে তেমন দর্শনীয় স্থান নেই। তাই মাঝে মধ্যেই আমরা এখানে ঘুরতে আসি। বাগানটা খুবই সুন্দর। আমাদেরও অনেক ভালো লাগছে। ঘুরছি, ফিরছি, ছবি তুলছি, বেশ মজা করছি।’

পরিবার নিয়ে তাহসিনা রায়হান বলেন, ‘জায়গাটি খুব সুন্দর। সূর্যমুখী বাগানে প্রথমবারের মতো অনেকেই পরিবার নিয়ে আসছি। আমরা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারছি। সুর্যমূখী ফুল দেখেও খুব ভালো লাগলো। এখানে ঘুরতে এলে মানুষ নিরাশ হবে না।

তিনি বলেন, ‘এই ফুল থেকে আবার তেলও তৈরি হয়। এই তেল খুব দামী। একইসঙ্গে তেল ও ফুল দুটাই খুব ভালো। মানুষের উচিত বেশি বেশি করে সূর্যমুখী চাষ করা।’

বাগান মালিক আলভী সজীব বলেন, গতবার করোনাকালীন সময়ে কলেজ বন্ধ থাকায় অলস বসে ছিলাম। মাথায় চিন্তা আসলো কিছু করার। সেই চিন্তা থেকেই একটি ছোট করে সূর্যমুখী বাগান করেছিলাম। বেশ সাড়াও পেয়েছিলাম। গতবার সফলতা পাওয়ায় এবার বেশ কিছু জায়গা জুড়ে বাগান করেছি। এবারের বাগান থেকে আয়ের বড় অংশ ব্যয় করা হবে এতিম ও অসহায় শিশুদের কল্যাণে।

তিনি বলেন, গতবছর ২৮ শতাংশ জায়গায় সুর্যমূখী চাষ করেছিলাম। ভালো ফলন হয়েছিল। এবার প্রায় ২.৫ (আড়াই) বিঘা নিয়ে বাগান করা হয়েছে, যেটা ব্যক্তি উদ্যোগে পাবনা জেলার ২য় বৃহত্তম সূর্যমুখী বাগান। জমি চাষে আমাদের প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে অনেক ফুল এখন গাছে আছে তা দিয়ে আশা করছি লাভবান হতে পারবো। এককানি (৩০ শতাংশ) জমিতে সরিষা চাষ করতে যেমন তেল হয় সুর্যমূখীতেও তাই হবে কিন্তু সূর্যমুখীর খরচ কম এবং রোগবালাই কম হয়। তেল বিক্রি করে লাভবান হলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে প্রজেক্ট আকারে চাষ করবো।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, মাঠ পর্যায়ে সূর্যমুখী চাষে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন তরুণ উদ্যোক্তাকে সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে। এই তরুণকেও সহায়তা করা হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, সূর্যমুখী তেল হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়াও এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে। তাই সূর্যমূখী তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ ও ভোজ্যতেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে ভোজ্যতেলের যে ঘাটতি রয়েছে সেটাও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

এএ