মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রেলক্রসিংয়ের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান গাজীপুরের ৮০ হাজার ভোটার

আবুল হাসান
প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

রেলক্রসিংয়ের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান গাজীপুরের ৮০ হাজার ভোটার

গাজীপুর শহর বলতে জয়দেবপুর, শিববাড়ি, লক্ষ্মীপুরা, বিলাসপুর, মারিয়ালী, ছায়াবিথী, হাড়িনাল ও আশেপাশের এলাকাকে বোঝানো হয়। মূলত ২৬, ২৭ ও ২৮ ওয়ার্ড  শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। রেলগেট, স্টেডিয়াম, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয়, হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই তিন ওয়ার্ডে অবস্থিত। তবে তিনটি ওয়ার্ডেই রয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনায় সমস্যা। এছাড়া মাদকের ভয়াল থাবাসহ রয়েছে নানা নাগরিক সুবিধা। অলিগলির রাস্তাঘাট এখনো বেহাল। সবচেয়ে বড় সমস্যা জয়দেবপুর রেলক্রসিং। এটি যেন এই এলাকার সবচেয়ে বড় দুঃখ। প্রতিদিন এই রেলক্রসিংয়ে ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। এবারের সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে এসব সমস্যার সমাধান চান স্থানীয় বাসিন্দাসহ তিন ওয়ার্ডের ৮০ হাজারের বেশি ভোটার।

জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে এই তিনটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩ জন। জয়দেবপুর বাজার, বাসস্ট্যান্ড, বিলাশপুর, মারিয়ানী, দেশিপাড়া এলাকা নিয়ে গঠিত সিটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডটি এখনো মানুষের কাছে একটি 'অপরিকল্পিত' ওয়ার্ড। এখানে রয়েছে ফুটপাথ দখল, শাখা রাস্তার অভাব, অনেক রাস্তার পরিধি অনেক কম যেখানে রিকশা চলে না। এছাড়া অপরিকল্পিত ডেনেজব্যবস্থা, মাদকসহ নানা সমস্যা রয়েছে এই ওয়ার্ডে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২৯ হাজার। এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন।


বিজ্ঞাপন


বিলাশপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মারুফ বলেন, জয়দেবপুরের সবচেয়ে বড় দুঃখ রেল ক্রসিং। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রেন আপডাউন করার কারণে আমাদের প্রচুর সময় অপচয় হয়। রেলগেট থেকে হেঁটে যেতে যে সময় লাগে, রিকশায়ও ঠিক এই সময় লাগে। এছাড়া ফুটপাথে দোকান বসানোয় যানজট লেগে থাকে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও অপরিকল্পিত।

gazipur2

অপর বাসিন্দা কাজল বলেন, বিলাশপুরের চলার রাস্তা সরু। অনেক স্থানে রাস্তার কাজ অনেক বাকি রয়েছে। ড্রেনেজ-নালা অপরিকল্পিত, মাঝপথে গিয়ে আটকে রয়েছে। বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয় অনেক। ঘনবসতি থাকার কারণে মাদকের আড্ডা বেশি।

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মো. হান্নান মিয়া হান্নু ঢাকা মেইলকে বলেন, ১০ বছর ধরে ওয়ার্ডের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। একজন বাসিন্দাও আমার কাছে সেবা নিতে এসে ফেরত যাননি। আমি সবসময় ওয়ার্ডের জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। কিছু কাজ বাকি রয়েছে, সেগুলো হয়ে যাবে।


বিজ্ঞাপন


অপর কাউন্সিলর প্রার্থী সঞ্জিত মল্লিক বাবু ঢাকা মেইলকে বলেন, এই ওয়ার্ডে রাস্তাঘাটের অভাব বেশি। সামান্য বৃষ্টি হলে মানুষ বাইরে বের হতে পারে না। এছাড়া মাদকের ছড়াছড়ি রয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে নাগরিক সমস্যা সমাধানে সবাইকে সম্পৃক্ত করে কাজ করব।

নগরীর লক্ষ্মীপুরা, তিন সড়ক, পূর্ব চান্দনা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকা নিয়ে গঠিত ২৭ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে রয়েছে ছোট বড় বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান। রাস্তাঘাটের পাশাপাশি এখানকার প্রধান সমস্যা মাদক ও চাঁদাবাজি। এছাড়া এলাকার কিছু উঠতি বয়েসী যুবক শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বিভিন্ন প্রকার হয়রানি করে থাকে। এই ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা সাড়ে ২২ হাজার। কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন।

লক্ষ্মীপুরা এলাকার বাসিন্দা মিয়াজ উদ্দিন বলেন, এলাকার অনেক রাস্তা ও অলিগলি সরু এবং অপ্রশস্ত। সবগুলো রাস্তা এখনো পাকা হয়নি। এছাড়া এখানকার অধিকাংশ যুবক মাদকের সঙ্গে জড়িত। কেউ মাদক বিক্রি করে, কেউ সেবন করে।

পূর্ব চান্দনা এলাকার আলিফ হোসেন বলেন, এখানকার নাগরিকদের সব সময় ভয়ে থাকতে হয় মাদক নিয়ে। এখানে মাদকের বিস্তার বেশি বলে পরিচিত। সন্তান পরিজন নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। এছাড়া এখানকার মানুষ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। এজন্য কারখানা শ্রমিকদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রয়োজন।

gazipur3

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর জাবেদ আলী জবে সাংবাদিকদের বলেন, আমার ওয়ার্ডে মাদকের সমস্যা ছিল। এটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সামনে আমি নির্বাচিত হলে এটি আরও কমে আসবে।

অপর কাউন্সিলর প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, মাদকের ভয়াবহতা থেকে যুবসমাজকে মুক্ত রাখাই আমার মূল কাজ থাকবে।

গাজীপুরের মূল শহর, ছায়াবীথি, হারিনাল এলাকা নিয়ে গঠিত ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্ডে বিনোদনের জন্য নেই কোনো পার্ক। মাদক, ফুটপাথ দখল, ড্রেনেজ সমস্যা এবং রেলক্রসিংয়ের দুর্ভোগ এখানকার প্রধান সমস্যা। ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩১ হাজার ৫০০ জন। নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন চারজন।

ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা মুকুল হোসেন বলেন, শ্মশান এলাকায় মাদকের ভয়াবহতা ছাড়াও অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এছাড়া মূল শহর হলেও এখানে নেই কোনো পার্ক। খেলার মাঠ থাকলেও কেউ খেলতে পারে না।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর